আমতলীতে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে উত্তাপ!


বরগুনার আমতলীতে পবিত্র রমজান মাসে উপজেলা শহরের বিভিন্ন বাজারে বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে পণ্যের দাম যেন আকাশচুম্বী। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ।
রবিবার উপজেলার বিভিন্ন মুদি দোকান ঘুরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ চিত্র দেখা গেছে।
ক্রেতারা জানান, বেশির ভাগ দ্রব্যের দাম সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। নিম্ন আয়ের মানুষ যা উপার্জন করছে, তার পুরোটাই খাদ্য দ্রব্য কিনতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ জানিয়ে ক্রেতারা বলছেন, বেশি মুনাফা লাভের জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়েছে বাজারের কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী । সবজির বাজারেও আগুন। ভোক্তারা বলছেন, সংশ্ল্ষ্টি কর্তৃপক্ষের নীতিমালার সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের অভাবেই বাজারও দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি।
যে পেঁয়াজ ছিল ২০ টাকা, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। সয়াবিন ছিল ১৪০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৬০ টাকা, এলপিজি গ্যাস ছিল ১ হাজার ৭০ টাকা, এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ টাকায়।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সবজি চাষ হলেও বাজারে নিয়ে এসে বিক্রি করছে তা চড়া দামে। টমেটো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায়। লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। মশুর ডাল ছিল ৮০- ৯০ এখন ১০০-১২২ টাকা, খেশারী ডাল ছিল ৪০ টাকা তা এখন ৬৮টাকা , মুগ ডাল ছিল ১২০ টাকা এখন ১৩০ টাকা , মরিচ গুড়া খোলা ছিল ১৫০ এখন ১৭০টাকা ও প্যাকেটজাত ছিল ২৫০ টাকা বর্তমানে ২৬০ , হলুদ গুড়া খোলা ছিল ৩২০ ও প্যাকেটজাত ৪৮০ টাকা এখন ৩৪০-৫০০টাকা , চিনি খোলা ৫৪ টাকা ও প্যাকেটজাত ৫৯ টাকা, আদা ছিল ২০০ টাকা এখন ২২০ টাকা , রসুন ছিল ১৩০ টাকা এখন ১৪০ টাকা , আটা ৩৮ টাকা ও ময়দা ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. নুর আলম জানান, কয়েকদিন পর আমদানি বাড়লে দাম কমতে পারে। বর্তমানে বাজারে পটল ৫০ টাকা, মূলা ফুলকপি ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, সিম ৫০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজারে ইলিশ মাছ ৩২০-১২০০ টাকা রুই ২৫০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা, সিলভার কাপ ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১শ’ ৫০টাকা থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ (চাষের) ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, কৈ মাছ (চাষের) ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, দেশী কৈ ৩০০ টাকা থেকে ৫শ’।
এছাড়া মাংসের বাজারে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, খাশির মাংস ৭০০ টাকা , দেশী মুরগী ৪০০০ টাকা, সোনালী মুরগী ২শ’৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৮০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমতলী নুতন বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মো.নাসির মিয়া বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যর দাম যে ভাবে চড়া তা সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
ক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, 'বাজারে প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেশি। তিনি বলেন, 'আমাদের অঞ্চলে সব ধরনের শাক-সবজির চাষ করা হয়। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই সঠিক দাম নির্ধারণে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী মিঠু চন্দ্র বলেন, 'অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সবজির অনেক বেশি দাম। কিন্তু আমরা কী করব! আমরাও অতিরিক্ত দামে গাড়ি ভাড়া দিয়ে মোকাম থেকে ও কৃষকদের কাছ থেকে আনি । আগের চেয়ে বর্তমানে গাড়ী ভাড়া দ্বিগুণ।'
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, 'বাজারের সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উপজেলার প্রধান বাজারগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে ।’মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমইউআর
