শেষ জীবনে থাকা-খাওয়ার কষ্ট থেকে মুক্তি চান বৃদ্ধ দম্পতি


শফিজ উদ্দিন (৬৩) ও রিজিয়া বেগম (৫০) দম্পতির পাঁচ মেয়ে। চার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে বরিশালে একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার সাপ্তাহিক আয় ১৮০০ টাকা। সে হিসাবে মাসিক আয় সাত হাজার ২০০ টাকা।
এ স্বল্প আয় থেকেই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য কিছু অংশ পাঠিয়ে দেন। সে টাকা দিয়ে সংসার চলছে না এ বৃদ্ধ দম্পতির। তারা কোনো ভাতাও পান না। এ অবস্থায় বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে দিন চলছে তাদের।
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভাংগাদেউলা গ্রামের বাসিন্দা শফিজ উদ্দিন। একসময় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এতে যা আয় হতো তা দিয়ে ভালোই চলছিল তাদের।
বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় দিন পার করছেন। স্ত্রী রিজিয়া বেগম বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই চুলা জ্বলে না। প্রতিবেশীরা যা দেন তা খেয়েই কোনোমতে বেঁচে আছেন তারা। থাকার ঘরটিও জীর্ণ-শীর্ণ।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ দম্পতি বলেন, ‘বাবা, আমাগো ছেলে সন্তান নাই। চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে যা আয় করে তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। আমরা এই বৃদ্ধ বয়সে কিছু করতে পারছি না। আমরা কোনো ভাতা পাচ্ছি না। একটা টিসিবির কার্ড করে দিয়েছে কিন্তু টাকা না থাকায় মালামাল কিনতে পারিনি। আজকে যে রান্না করবো ঘরে চাউল নাই।’
তারা আরও বলেন, ‘আশপাশের কিছু ভালো মানুষ আছে। তারা আমাগোরে খাওন দিয়া যায়, আমরা হেইয়া খাইয়া থাহি। আল্লায় যেন এই জীবন থাইকা আমাগোরে মুক্তি দেন। শেষ জীবনে যাতে একটু নামাজ-রোজা কইরা মরতে পারি হেইডাই চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লাভলু বলেন, ‘(আমার ওয়ার্ডে) এ রকম অসহায় লোক আছে সেটা আমার জানা নেই। তবে তারা যদি টিসিবির কার্ড না পেয়ে থাকেন তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলবেন।’
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদার বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে টিসিবিপ্রাপ্তদের তালিকা করানো হয়েছে। এরমধ্যে যদি কোনো প্রয়োজনীয় ব্যক্তি বাদ পড়েন তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’
এইচকেআর
