ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

Motobad news

সবজী চাষে সফল ২ শতাধিক কৃষক

সবজী চাষে সফল ২ শতাধিক কৃষক
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার তালতলীতে দুই শতাধিক কৃষক সবজী চাষ করে সফল হয়েছেন। উপজেলার দক্ষিণে ছোট্ট একটি গ্রামের নাম সওদাগর পাড়া। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখন সবজী চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

শিশির ভেজা ঘাসে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙা ভোরে কোদাল কাস্তে হাতে কৃষক চলেন ফসলের মাঠের দিকে। সারাবেলা মাঠে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ফলান এ গ্রামের কৃষকরা। আর তাদের সবজি স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। বাজারজাত করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন সওদাগর পাড়া গ্রামের দুই শতাধিক কৃষক।

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম সওদাগর পাড়া। এ গ্রামের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এখানকার মানুষের ধান চাষই অন্যতম আয়ের উৎস। এছাড়াও বছরের ১২ মাসই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেন তারা।

সবজি চাষ করে এখানকার মানুষ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছেন। এছাড়া গ্রামের শিক্ষিত বেকাররা চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষি কাজে নির্ভরশীল হচ্ছেন। এ গ্রামের নামটি এখন কৃষি গ্রাম নামে সকলের কাছে পরিচিত।

কৃষকরা বলেন, সওদাগর পাড়া গ্রামের প্রথম সচেতন চাষী শাহাদাৎ মাতুব্বর, তার হাত ধরে এই গ্রামের মানুষ সবজি চাষে স্বাবলম্বী হয়েছে। এই উপজেলার সবজী চাষে এক অন্যরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, করলা, শসা, হাইব্রিড মরিচ, বরবটি ও বেগুনসহ অনেক ধরনের সবজি চাষ শুরু করেন। এসব কাজে তিনি সফল হয়ে গ্রামের তরুণ ও যুবকদের কৃষিকাজের পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে অনেকেই কৃষিকাজ করে সফল হয়েছেন।

জানা যায়, ২০০৬ সালে বিএ পাস করে তালতলী বাজার গার্মেন্টসের দোকান শুরু করেন শাহাদাৎ। ব্যাবসায় লোকসান হলে হতাশায় ভুগতে থাকেন। পরে কৃষি পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। দুই বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে সবজি চাষ করেন। এবং সফল হন। নিজের অভাব মোচন হওয়ার পর শাহাদৎ এলাকাবাসীর অভাব মোচনের উদ্যোগ নেন। তার দেখানো পথে সওদাগর পাড়া গ্রামে দুই শ’ কৃষক সাফল্য পেয়েছে।

কৃষক শাহাদাৎ মাতুব্বর বলেন, মৌসুমি সবজি যেমন তরমুজ, শিম, বেগুন, বরবটি, ভুট্টা, লাউ, শসা, টমেটো, করলাসহ বিভিন্ন জাতের মৌসুমি ফল এবং সবজি আবাদের পরামর্শ দেই। গ্রামের সবাই যার যেটুকু জমি আছে, সেই জমিতে শুরু করেন মৌসুমি সবজির আবাদ। এতে খুব দ্রুতই সাফল্যের মুখ দেখেন কৃষকরা।

তিনি আরো বলেন, সওদাগর পাড়ার কৃষি স্থানীয় তালতলী বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বরিশাল বিভাগের সকল বাজারে চলে যাচ্ছে, পদ্মা সেতু চালু হলে তালতলীর সবজি ঢাকায় চলে যাবে। এ এলাকায় প্রতি মৌসুমে দুই কোটি টাকার সবজি বিক্রি হয়। কৃষকদের সহায়তা করে বদলে দিয়েছেন সওদাগর পাড়া গ্রাম।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সি এম রেজাউল করিম বলেন, একজন আদর্শ কৃষক শাহাদৎ মাতুব্বর। সওদাগর পাড়া গ্রামে তথা তালতলী উপজেলায় কৃষিতে তার অবদান রয়েছে। আমি তালতলীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করছি এ উপজেলার এক ফসলি জমি গুলোকে তিন ফসলির আওতায় নিয়ে আসতে। আর কোনো জমি পতিত রাখা যাবে না সেই জন্যে কাজ করে যাচ্ছি। গত বছর রবি মৌসুমে চাষের আওতায় ছিল প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমি। এ বছর ১০ হাজার হেক্টরের চেয়ে বেশি জমি চাষের আওতায় নিয়ে এসেছি।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন