ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ফার্মাসিস্টের দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন


ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট পুলক ঘরামির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, রোগীদের সরকারি ওষুধ প্রদানে গড়িমসি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডা. শিহার উদ্দিন এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আবুয়াল হাসানকে প্রধান ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমির হোসাইন এবং সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী মতিয়ার রহমানকে সদস্য করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সদর হাসপাতালের দন্ত প্রযুক্তিবিদের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী উল্লেখিত ওষুধ স্লিপের মাধ্যমে সরকারি সরবরাহের জন্য বিতরণ কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়। ২৪৯৯ স্লিপের মাধ্যমে ২৪ জানুয়ারি চারটি ওষুধ চিকিৎসক দিলে ইসোটিড দেয়নি।
২৭ জানুয়ারি পুনরায় ওই চারটি ওষুধ চিকিৎসক দিলে সেফুল ২৫০ দেয়নি। যে ওষুধে সরকারি সীল নেই সে ওষুধ অসৎ উদ্দেশ্যে আত্মসাত কামনার্থে সরবরাহ করতে গড়িমসি করেন দায়িত্বরত পুলক ঘরামি। এসময় রোগীর সাথেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে সে। বিষয়টি নিয়ে সামনে না আগানোর জন্য বিভিন্নজনকে দিয়ে মুঠোফোনে হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
অভিযোগকারী আতিকুর রহমান জানান, দাঁতে ব্যাথার কারণে সদর হাসপাতালের দন্ত প্রযুক্তিবিদ জ্যোতিষ সিকদারকে ২৪৯৯/৬১ টিকিটে ২৪ জানুয়ারি সোমবারে দেখান। রোগ প্রতিকারের জন্য সেফুর ২৫০ (সেফুরোক্সিম বিপি ২৫০), ইসোটিড-২০ (ইসোমিপ্রাজল ২০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রানিডাজল ৪০০ প্রেসক্রিপশনে দেন।
হাসপাতালের সরকারি ওষুধ সরবরাহে ব্যবস্থা থাকায় ৪টি ওষুধই তিনি স্লিপে দেন। স্লিপ নিয়ে ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রে গেলে দায়িত্বরত ফার্মাাসিস্ট (সেফুর ২৫০ (সেফুরোক্সিম বিপি ২৫০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রানিডাজল ৪০০) ৩ধরনের ওষুধ দেয়। প্রেসক্রিপশনে ৪টি অথচ আপনি দিলেন ৩টি জানতে চাইলে তখন তিনি বাকি ওষুধ (ইসোটিড-২০) বের করে দেন।
৩দিন পরে ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় দন্ত চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি ওই ওষুধ ৪টি আবারও দেন। সেই সাথে সরকারি সেবা গ্রহণের জন্যও স্লিপ দেন। বিতরণ কেন্দ্রে স্লিপ জমা দিলে ফার্মাসিস্ট আবারও ৩টি ওষুধ (ইসোটিড-২০ (ইসোমিপ্রাজল ২০), কিটোরোলাক-১০ ও মেট্রানিডাজল ৪০০) দেন। বাকি ওষুধ সেফুর-২৫০ চাইলে তিনি ওষুধ, স্লিপ ও প্রেসক্রিপশন নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে বলে ঔদ্ধত্যপুর্ণ আচরণ করে। পরে শক্তভাবে তাকে চ্যালেঞ্চ করলে বাকি ওষুধটা বের করে দিয়ে ভুল হইছে বলে স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সরকারি ওষুধ সেবায় যে দুটি ওষুধের প্যাকেটে সরকারি সীল নেই শুধু মাত্র দু’বারে ওই দুটো ওষুধে ভুল হয়। এটি কি ইচ্ছাকৃত ভুল নাকি আত্মসাতের জন্য কৃত্রিম সংকট বা অন্যভাবে এড়িয়ে কৌশলের আশ্রয় নেয়া?
এছাড়াও সরকারি যেসব ওষুধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ। ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয় এমন লেখার সীল নেই, সেসব ওষুধে ফার্মাাসিস্ট পুলক চন্দ্র ঘরামির কাছে ফুরিয়ে যায়। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাইরের ফার্মেসেতে রাতের আধারে বিক্রি অবৈধভাবে ফায়দা হাসিল করছে।
সিভিল সার্জন ডা. শিহাব উদ্দিন জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর হাসপাতালের সিনিয়র কলসালটেন্ট মেডিসিন ডা. আবুয়াল হাসানকে প্রধান ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমির হোসাইন ও সদর হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী মতিয়ার রহমানকে সদস্য করে ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কেআর
