ফের অপমানিত হয়ে দেশবাসীর কাছে বিচার দিলেন হিরো আলম


গেল ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সদস্যদের এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আর তাই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিজেদের অপমানের বদলা নিতে তিন দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।
এমডিকে এফডিসিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না- আন্দোলনকারীদের এমন ঘোষণার মধ্যেই আজ (৩০ জানুয়ারি) এফডিসিতে ঢুকে পড়েন নুজহাত ইয়াসমিন। দুপুর ১২টার পর পরিচালক সমিতির সামনে এমডির কুশপুত্তলি পোড়ায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
১৭টি সংগঠনের নেতাদের এই আন্দোলনে যোগ দিতে এফডিসিতে গিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচিত হিরো আলম। কিন্তু পরিচালক শাহীন সুমন তাকে অপমান করেন এবং বের হয়ে যেতে বলেন।
এর আগে গেল শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন দেখতে যান হিরো আলম। এ সময় সাধারণ দর্শকদের নজরে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে সে ফটোশুটে আটকা পড়েন। দর্শকদের ফটোশুটের কারণে তিনি আহত হন। এ সময় ভক্তদের ভিড় থেকে হিরো আলমকে রক্ষা করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাকে উদ্ধার করে।
হিরো আলম অভিযোগ করে বলেছেন, ‘এফডিসিতে আমার ওপর হামলা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এফডিসি এলাকা থেকে পুলিশ আমাকে বের করে দিয়েছে।’
এফডিসিতে গিয়ে বারবার এভাবে অপমানিত হয়ে দেশবাসীর কাছে বিচার দিয়েছেন হিরো আলম। আজ (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বলেন, “আশা করি সবাই ভালো আছেন। কোনো কারণ ছাড়া আমি লাইভে আসি না। শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছে। ভোটের দিন (২৮ জানুয়ারি) এফডিসিতে প্রযোজক-পরিচালকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সে বিষয়ে আজ (৩০ জানুয়ারি) সকালে এফডিসিতে মানববন্ধন ছিল। এ কারণে আজ সকালে আমিও এফডিসিতে যাই। পরিচালক শাহীন ভাই (শাহীন সুমন) আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। আমাকে বলে ‘আউট, আউট এখান থেকে।’ আমার কথা, ওখান থেকে আমাকে আউট করার উনি কে?”
হিরো আলম বলেন, ‘আমি তো আন্দোলন করছি আপনাদের (প্রযোজক-পরিচালক) সবার জন্য। প্রযোজক-পরিচালকদের ঢুকতে দেয়নি বলেই তো আমার খারাপ লেগেছে। শাহীন ভাইকে আমি বড় ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করি। আপনি আজ যে ব্যবহার করেছেন, তাতে আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি। আপনি একজন পরিচালক, আপনার কাছে আমি শিখব। আপনাদের পাশেই আছি আমি। আমাকে ভালো না লাগলে আপনি আমাকে আড়ালে ডেকে বলতে পারতেন, আলম তোমার এখানে থাকার দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘ওখানে (এফডিসি) আপনি (শাহীন সুমন) ঢুকতে পারলে আমিও ঢুকতে পারি। আমিও একজন প্রযোজক। আপনি তো আমাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে পারেন না। আপনি কেন আমাকে তাড়িয়ে দিলেন? এই ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা জানাই। দেশবাসীর কাছে আমি বিচার দিলাম, এই ঘটনায় শাহীন সুমনের কি বিচার হওয়া উচিত?'
এদিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে হিরো আলম লিখেছেন, ‘আমি শাহীন সুমন ভাইকে অনেক সম্মান করি বলেই কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করে বের হয়ে আসছি। তার মানে এই না যে, এটা আমার দুর্বলতা। এটা আমার মানবতা। আজ উঁচু-নিচু মানুষের ভেদাভেদ করেন বলেই আপনাদের মধ্যে এতো কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। আপনি বর্তমানে পরিচালক সমিতির মহাসচিব। মানুষের সঙ্গে বিনয়ী হয়ে কথা বলা দরকার ছিল ভাই।
আমরা সবাই মানুষ। মানুষ গরিব আর বড়লোক বলে কোনো শব্দ পৃথিবীতে নাই। মহান আল্লাহতায়ালা সবাইকে সমান করে পাঠিয়েছে। আপনাদের যদি আমাকে ভালো না লাগে, কথা বলবেন না। আমি আজ গরিব, চেহারা কুৎসিত হলে যদি আপনার এত কষ্ট হয়, তাহলে কি আমাকে অপমান করার রাইট আপনাদের রয়েছে? আপনার কাছে আমার এই প্রশ্ন? উত্তর দেবেন।
আমিও বাংলাদেশের নাগরিক। আমার জন্য মাননীয় সরকার আইন সমান করে রেখেছেন। এর একটি সুরহা করবেন। নতুবা আমিও আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব। ভাই আমিও একজন হিরো আলম, আমিও একজন প্রযোজক-অভিনেতা।’
এমবি
