ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

বেগমগঞ্জে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

বেগমগঞ্জে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় কয়েকটি নতুন রাস্তা নির্মাণ ও পুরোনো সড়ক সংস্কারকাজে সিডিউল বহির্ভূত ভাবে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরকারের জিওবি মেন্টেনেজ প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি বেগমগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে চলছে এই নির্মাণকাজ। অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ছামিউল ট্রেডাস। এর স্বত্তাধিকারী আবদুল হামিদ রাজু।

এর মধ্যে দুটি রাস্তা নির্মাণে একেবারে নিম্নমানের ইট, ইটের খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও সড়কের পাশে থাকা গাইড ওয়াল গুলোও একেবারে নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে  বেগমগঞ্জ উপজেলার জমিরহাট থেকে কাদিরপুর ইউনিয়নের সাহেবের হাট অংশের সড়কের ২৩০০ মিটারের এই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়। এ ছাড়াও একই সময়ে ৭৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের সুরুরগো পোল থেকে মালেকের দোকান ২২০০ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিডিউলের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো দুটি সড়কে নিম্নমানের কাজ করছেন ঠিকাদার। কাজের শুরু থেকেই তদারকি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তড়িঘড়ি করে এসব অনিয়ম করে চলছে। এজেন্টে একেবারে নিম্নমানের ইট, খোয়ার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে একেবারে নিম্নমানের ইটের খোয়া,নিম্নমানের বালু। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কের কাজে বাঁধা দেন। তারপর এলাকাবাসী বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগকে মৌখিক ভাবে জানিয়েও ফল পায়নি। এরপরও খারাপ ইট দিয়ে রাস্তা করে দুটি সড়কই বর্তমানে পিচ ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসাী বলছে, সামনে বর্ষায় সব উঠে যাবে। এত খারাপ রাস্তা করার কী দরকার?

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও সড়কের পাশের গাইড ওয়াল গুলো একেবারে যেনতেন ভাবে নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। অপরদিকে শ্রমিকেরা বলছেন, ঠিকাদার যে রকম ইট-বালু দিচ্ছেন, তা দিয়েই তাঁদের রাস্তা নির্মাণ করতে হচ্ছে। একাধিক শ্রমিক নিম্নমানের ইট ও ইটের খোয়া ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকারও করেন। এ সময় স্থানীয়রা তদারকি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন উচ্চ পর্যায় থেকে বেগমগঞ্জের সকল ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নোয়াখালীর আওতায় বাস্তবায়িত কাজ গুলো সঠিক ভাবে অন্তত একবার তদন্ত করা হোক। তাহলে অনেক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। কারণ তদারকি প্রতিষ্ঠানের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরকারি সিডিউল অনুযায়ী উন্নয়ন কাজের মান নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট। কারণ এর ঘাটে ঘাটে অনেক অনিয়মের গান আছে। এ দুটি সড়কের বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মিকে তথ্য দিতে তালবাহানা করে সংশ্লিষ্ট তদারকি প্রতিষ্ঠান।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্নধার আবদুল হামিদ রাজু নিম্নমানের ইট-বালু ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, রাস্তায় ইট-বালু ভালো মানের ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে যাঁদের কাছ থেকে এগুলো নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা তারা ভুলবশত মাঝে মধ্যে এক নম্বর ইটের মধ্যে কিছু খারাপ ইট দিয়েছে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো.একরামুল হক বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার অভিযোগ পাওয়া গেলে নিন্মমানের উপকরণ সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এলাকাবাসী তাঁর দাবি নাকচ করে দিয়ে দুষছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। তারা বলছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা থাকায় নিম্নমানের কাজ হয়। এটা রাষ্ট্রও জনগণের সাথে এক ধরনের প্রতারণা।
 


পিএম
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন