সাগরতীরে অসময়ে তরমুজ চাষ, দামে চড়া


একপাশে সাগর, অন্যপাশে পাহাড়। সাগর আর পাহাড়ের মাঝে পিচঢালা দীর্ঘ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। সড়কের পাশে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। সৈকতের তীরে চাষ হচ্ছে রসালো তরমুজ। চোখ জুড়ানো তরমুজের বাগানে প্রতিনিয়ত হানা দিচ্ছে মেরিন ড্রাইভে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।
হিমছড়ি, বড়ছড়া, পেঁচারদ্বীপ, দরিয়ানগর এলাকায় উৎপাদিত হচ্ছে এসব তরমুজ। তবে অসময়ের ফল হওয়ায় দাম একটু চড়া।
হিমছড়ি এলাকার কৃষক রমজান জানান, গত বছর করোনা এবং পোকার আক্রমণে তরমুজ আশানুরূপ উৎপাদন না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। কিন্তু এবার বিশেষ যত্ন ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।
আরেক চাষি ইমাম হোসেন বলেন, গত বছর লকডাউনের কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই বছর মেরিন ড্রাইভ এলাকায় মাত্র তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু উন্নতমানের বীজ না হাওয়ায় পোকামাকড়ের আক্রমণে সব ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে এসব ক্ষেত থেকে তরমুজ পুরোদমে বাজারে আসবে। কিন্তু সৈকত পাড়ের এ তরমুজ আগাম বাজারে আসায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।
দরিয়ানগর পর্যটন এলাকার রাস্তার পাশে তরমুজ বিক্রি করছেন রিদুয়ান (১৭)। তিনি জানান, প্রতিদিন ৫০-৭০টি তরমুজ বিক্রি করছেন তিনি। শীত মৌসুম হলেও নতুন ফল হিসেবে পর্যটক ও স্থানীয়রা তরমুজ কিনছে। ৩-১০ কেজি ওজনের তরমুজ পাইকারি ১৫০-১৮০ টাকায় কিনে ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পর্যটক আল আমিন বলেন, গাড়ি নিয়ে হিমছড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সড়কের পাশে তরমুজ দেখতে পেয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসি। অসময়ে তরমুজ দেখে খুশি হয়েছি। কিন্তু গিয়ে দেখি দামটা বেশি। এটা হওয়ায় স্বাভাবিক। নতুন ফল হিসেবে দামটা বাজারে আনা ফরমালিন ও বিষ মেশানো ফল থেকে বেশি।
মেরিন ড্রাইভ সড়ক ছাড়াও কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা, লালদীঘির পাড়, থানা সড়ক, বন বিভাগের সামনে, হাসপাতাল সড়ক ও পানবাজার সড়কে অন্তত অর্ধশতাধিক ফলের দোকানে অসময়ে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দেখা মিলছে ঈদগাঁও, চকরিয়া, উখিয়া, লোহাগাড়াসহ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কের স্টেশন এলাকার ফলের দোকানগুলোতেও।
স্থানীয় যুবক আরিফুল ইসলাম আসাদ বলেন, দরিয়ানগর হিমছড়ি মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে যে তরমুজ চাষ হচ্ছে সেগুলোর জাত আগাম। গত বছর চাষিরা করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমরা এবার আগাম চাষ দেখে খুশি হয়েছি। যদিও দামটা একটু বেশি। দাম বাড়তি হওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের খাওয়া সম্ভব না।
এসএম
