আগৈলঝাড়ায় রোবট ‘বঙ্গ’ দেখতে গিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস ইউএনও আবুল হাশেমের


বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বাংলা, ইংরেজি ও বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা রোবট ‘বঙ্গ’ দেখতে গিয়ে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন কলেজ ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পালকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম।
সোমবার সকালে উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের জয়দেব পালের ছেলে সরকারি গৌরনদী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পালের বাড়িতে গিয়ে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম। বাংলা, ইংরেজি ও বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা রোবট ‘বঙ্গ’ তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কলেজ ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পাল।
আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর সময়ে তৈরি করায় রোবটটির নাম দেওয়া হয়েছে “বঙ্গ”।
রোবটের স্বত্বাধিকারী ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পাল জানান, এ রোবটটি বাংলা ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারে। বাড়ি ও অফিস-আদালত কিংবা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগলে মুহুর্তেই খবর পৌঁছে দেবে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিসকে।
এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ হলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে ঘরে থাকা লোকজনকে। আবার প্রয়োজনে রোবটটি কাজ করবে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে। প্রয়োজনে চিকিৎসক হিসেবে প্রাথমিক চিকিৎসাও দিতে পারবে রোবটটি।
সেই সঙ্গে কৃষকের কৃষি কাজে, বিশেষ করে ফসলের রোগ বালাই মোকাবেলায় পরামর্শ দেবে এ রোবট।
তিনি আরও জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমি এ রোবটটিকে আরও আধুনিকভাবে তৈরি করে দেশের মানুষের সেবায় কাজে লাগাতে পারবো।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে অনেকটাই দারিদ্রতাকে জয় করে মেধা দিয়ে বাংলা ও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলা এ রোবট তৈরির পেছনে ছিল সুজনের পরিবার, শিক্ষক ও সহপাঠীদের একনিষ্ঠ উৎসাহ, মনোবল আর ভালোবাসা। আর এসব কিছুকেই অনুপ্রেরণার অংশ হিসেবে কাজে লাগিয়েছে সুজন।
রাজিহার ইউনিয়নের সচিব সুজন পালের কাকা গৌতম পাল জানান, অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা থাকা সত্বেও পরিবার থেকে দেওয়া হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে এবং নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা উপার্জন করে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে চার মাস চেষ্টার পর রোবটটি প্রস্তুত করে।
আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর সময়ে তৈরি করা এ রোবটটি বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম করণ করা হয় “বঙ্গ’’। সুজনের আবিষ্কৃত রোবট বঙ্গ’র মাধ্যমে অগ্নিনির্বাপণ, আগুন থেকে মানুষকে বাঁচানো এবং অগ্নিকান্ডের স্থানে দ্রত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও ভূমিকা রাখবে প্রাথমিক শিক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও কৃষি ও ফসলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে। তাকে যে কোনো প্রশ্ন করলে গুগল থেকে সার্চ করে উত্তর দেবে।
রোবটটি দেখতে ও তার সঙ্গে কথা বলতে প্রতিদিনই ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজনের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মানুষ। ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পালের বাবা জয়দেব পাল ও মা সবিতা রানী পাল প্রথমে সুজনকে নিরুৎসাহিত করলেও এখন ছেলের মানুষের মতো কথা বলা রোবট তৈরি করায় খুশি তারা।
এইচকেআর
