‘আল্লাহকে বলেছি সিনেমার রিজিক আমার দরকার নেই’

ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা আহমেদ শরীফ। ১৯৭২ সাল থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি প্রায় আট শতাধিক বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। খলনায়ক হিসেবে সফল হলেও অনেক চলচ্চিত্রে ভিন্ন চরিত্রেও অভিনয় করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।
পৌনে তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই অভিনেতা। অভিনয় থেকে বিচ্ছিন্ন আরও আগে থেকেই। সম্পতি দেশে এসেছেন। বুধবার (৩ নভেম্বর) এসেছিলেন সচিবালয়ে।
কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, আমেরিকায় আমার সব আছে। কিন্তু মনে হয় কিছুই নেই। মনে হয় আমার ভেতরের হার্টটা খালি। চেনা চেহারাগুলো দেখতে পারছি না। ৫০ বছর ধরে শুনেছি লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন, এখন সেটি নেই। আমার পরিচালকদের চেহারাগুলো নেই। যাদের সঙ্গে আমার জীবন কাটিয়েছি, আমার সহশিল্পীরা নেই। অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। এখানে ১০/১৫ দিনের জন্য এসেছি। সময় কিভাবে চলে যাচ্ছে! চেনামুখগুলোর সঙ্গে বসলে কিভাবে একঘণ্টা-দুইঘণ্টা-তিনঘণ্টা চলে যাচ্ছে। আমেরিকায় একা ঘরে বসে টিভি দেখা, পেপার পড়া, লিখি বসে বসে। এভাবেই সময় কাটে, খুব কষ্ট।
পৌনে তিন বছর ধরে আমেরিকায় আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যা চাই পেয়েছি। আমার ওষুধ ফ্রি, চলাফেরা ফ্রি, বাসস্থান ফ্রি- ফ্রি মানে তারা টাকা দিয়ে দেয়। আমার কিছু লাগে না। আমার একটা সুন্দর ফ্ল্যাট আছে। বাংলাদেশের মানুষগুলো আমার হৃদয়ের মধ্যে নেই, তাই সব পেয়েও আমার কাছে ফাঁকা মনে হয়।
আমার পুরোনো ছবি যেগুলো আমি এখানে দেখার সুযোগ পাইনি, সেগুলো ইউটিউবে অবসরে দেখছি৷ ভালো লাগে- যোগ করেন আহমেদ শরীফ।
বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেতা বলেন, তবে সবচেয়ে বড় যে কাজটা ওখানে বসে করতে পেরেছি, যেটা আপনারা শুনেও আনন্দিত হবেন। তা হলো- আমি বাংলায় কোরআন শরীফ পড়ে শেষ করতে পেরেছি। কোরআন শরীফে কী নির্দেশ... আগে যখন ছেলেবেলায় পড়েছি কিছুই বুঝতাম না, এখন বাংলায় কোরআন পড়ে এইটুকু বলতে পারি প্রত্যেকটি আয়াত আমার কাল্বের মধ্যে ঢুকে গেছে আল্লাহ তা’য়ালা রাসুলকে (সা.) কী বলেছেন। মানুষের জন্য কোনটা উপকারী, কোনটা উপকারী না। কোন শাস্তি তিনি মানুষকে দেবেন। সবকিছু সেখানে আছে। ভেরি ক্লিয়ারলি বাংলায় লেখা আছে। বাংলায় কোরআন পড়ে এই বয়সে আমি অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি। আমি সেভাবেই দিনাতিপাত করছি। এখন নামাজ, কোরআন শরীফ পড়া, এগুলোই আমার সাথী।
এমবি
