ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

মামুনুলের ৩ বিয়ের কাবিন একটি: পুলিশ

মামুনুলের ৩ বিয়ের কাবিন একটি: পুলিশ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

 

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক রিমান্ডের প্রথম দিনই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক তিনটি বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। এই তিনটি বিয়ের মধ্যে একটির কাবিন করেছেন। বাকি দুইটির কাবিননামা করেননি বলে মামুনুল জানিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন, যে দু'টি বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাদের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছেন। তবে বিয়ে সংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজপত্র তার কাছে নেই। কাবিনামাও নেই। ওই দুই নারীর ডিভোর্স হওয়ায় তাদের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এগিয়ে যান তিনি। একজনকে মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসায় চাকরিও দিয়েছেন তিনি। 

কাগজপত্র ও কাবিন না থাকা সত্ত্বেও বিয়ে কিভাবে বৈধ হলো- এমন প্রশ্নে নানা কুযুক্তি ও অপব্যাখা দেন মামুনুল।

তদন্ত সংশ্নিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি মামুনুলের কথিত ছোট স্ত্রী। জান্নাত আরা ঝর্ণাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন তিনি। মামুনুলের প্রথম স্ত্রীর নাম আমেনা তৈয়বা। কথিত মেঝো ও ছোট স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ের কোনো কাবিননামা হয়নি বলে মামুনুল পুলিশকে জানান। 


তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আরও জানান, এরই মধ্যে মামুনুল মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ভেতরে-বাইরে তিনি দ্বৈত চরিত্রের অধিকারী এটা প্রকাশের পরই থেকে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। বিশেষ করে কথিত বিয়ে সংক্রান্ত বিষয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই ঘরে-বাইরে নানামুখী চাপে ছিলেন তিনি। হেফাজতের ভেতরেও একটি অংশ তার কর্মকাণ্ড নিয়ে ভেতরে ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান। নারায়ণগঞ্জ কাণ্ডের পর প্রথম স্ত্রীসহ নিজের পরিবারের সদস্যদের কারও কারও কাছে বিরাগভাজন হন তিনি। নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরে বাসায়ও যাননি মামুনুল।

এ দিকে সোমবার পর্যন্ত তার কোনো স্বজন, সহকর্মী বা কোনও অনুরাগী তার খোঁজও নেননি। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা সোমবার সমকালকে এসব তথ্য জানান।

গত রোববার দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। মারধর, হুমকি ও ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃত গোলযোগ সৃষ্টি, চুরির অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় গত বছর দায়ের করা মামলায় তাকে সাত দিনের রিমান্ড পায় পুলিশ। 

মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল হক মামুনুলকে সোমবার আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক দেবদাস চন্দ্র অধিকারী রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশিদ সমকালকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতেই মামুনুলের কাছে তার কথিত বিয়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। বিয়ের ব্যাপারে তিনি নিজের মতো ব্যাখা দেন। তবে এটা স্বীকার করেছেন এসব বিয়ের কোনো আইনি ডকুমেন্ট তার কাছে নেই।

কাবিননামা হলো একটি আইনি দলিল। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের নিবন্ধন একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করে। নিবন্ধন ছাড়া স্বামী-স্ত্রী প্রমাণ করা কঠিন। বিয়ের নিবন্ধন না থাকা আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধে ২ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।


টিএইচএ/
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন