ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

ওসি প্রদীপের নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সাংবাদিক ফরিদুল 

ওসি প্রদীপের নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন সাংবাদিক ফরিদুল 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

তৎকালীন টেকনাফ থাকার ওসি প্রদীপের নামে নিউজ করে গ্রেপ্তার হন কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা। ‘টাকা না দিলে ক্রসফায়ার দেন টেকনাফ থানার ওসি’— এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর গুম করে রাখেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

এর তার বিরুদ্ধে বিদেশি মদসহ নানা ধারায় ছয়টি মামলা করা হয়। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিনহা হত্যা মামলায় সাক্ষী হিসেবে তার জবানবন্দি নিয়েছেন আদালত। এ সময় তাকে গ্রেফতারের পর কয়েক দিন ধরে নির্যাতন করার বর্ণনা আদালতে উপস্থাপন করেন ফরিদুল মোস্তফা। জবানবন্দী দেওয়ার পর আদলত চত্বরে সাংবাদিকদের এমনটাই জানান সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর সাবেক ওসি প্রদীপ আমাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তারপর একটি কক্ষে নিয়ে আমার চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে দেয়। যে কারণে আমি দৃষ্টি হারাতে বসেছিলাম। সেই নির্মম নির্যাতনের পর আমাকে কক্সবাজার শহরের কবিতা চত্বর এলাকায় নিয়ে ক্রসফায়ার দেওয়ার চেষ্টা করে। তা না করে পরে আমাকে বিদেশি মাদক দিয়ে ছয় মামলায় আসামি করা হয়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে পুলিশ আটক করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করা হয়। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।

সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনে চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৃতীয় দফায় ৩ দিনে পর্যন্ত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ওসি প্রদীপ সহ মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজেন ভ্যান করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন