আদালতে হেফাজত নেতা মামুনুল হক
3.jpg)

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয় থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা ৮ মিনিটে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
আদালতের হাজত খানার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল থেকেই আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
২০২০ সালের ৭ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার তদন্তে মামুনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় রোববার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় এক নাগরিক তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা জি এম আলমগীর শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। মামলায় অভিযোগ ছিল, বেআইনি জনতাবদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি দেওয়া, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি ও প্ররোচনা। একই মামলায় মোবাইল, সাত হাজার টাকা, ২০০ ডলার এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ডেবিট কার্ড চুরির অভিযোগও রয়েছে।
এদিকে গ্রেফতারের পর তাকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রথমে তাকে মোহাম্মদপুর থানা ও পরে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ গ্রেফতারের পর মামুনুলের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেছিলেন, মামুনুলের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাকে আপাতত ২০২০ সালের মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত জীবন আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।
নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। মামুনুলকে এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে মনে করছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।
মামুনুলের বিরুদ্ধে ১৭ মামলা
ডিএমপি সদরদফতর সূত্রে জানা গেছে, ডিবির মতিঝিল বিভাগে তদন্তাধীন আটটি মামলা, লালবাগ বিভাগে তদন্তাধীন দুটি মামলা এবং তেজগাঁও বিভাগে তদন্তাধীন একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক। এছাড়া মতিঝিল থানায় তদন্তাধীন একটি এবং পল্টন থানায় তদন্তাধীন চারটি মামলায় তার নাম রয়েছে। ১৬টি মামলার মধ্যে ১৫টিই হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর। ওই ১৫ মামলার বাদী পুলিশ। ১৬ মামলার অন্যটি সম্প্রতি পল্টন থানায় দায়ের করেন যুবলীগের এক নেতা।
/ইই
