সেতু যেন মরণ ফাঁদ!


কাঁচা হলুদ আর লাল চিনির জন্য বিখ্যাত ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা। এ উপজেলার বানার নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী উপজাতি অধ্যুষিত রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়ন।
১১ দশমিক ৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১ লাখ ৮৮ হাজার ১৫ জন জনসংখ্যার এ ইউনিয়নটি শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় আচার- আচার, রীতি-নীতি ও খেলাধুলায় নিজস্ব স্বকীয়তা সমুজ্জ্বল।
তবুও যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এ ইউনিয়নটি যেন অনেকটাই পিছিয়ে। তার অন্যতম প্রমাণ রাঙ্গামাটিয়া বাজারের পশ্চিম পাশের সড়কের ঐহিত্যবাহী বড়বিলা বিল সংলগ্ন খালের ওপর ভেঙে ধসে পড়া সেতুটি। র্দীঘ কয়েক বছর ধরে এ সেতুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে থাকলেও দেখার যেন কেউ নেই।
ফলে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সেতুটি এখন এলাকাবাসীর জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তবুও জীবনের তাগিদে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে। চলে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ভ্যানসহ ছোট বাহনগুলোও। তবে সম্প্রতি সেতুটির মাঝের অংশ ভেঙে ধসে পড়ার কারণে অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিনসহ আরও অনেকেই।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, রাঙ্গামাটিয়া-কেশরগঞ্জ হয়ে গারো বাজারের যাতায়াতের একমাত্র সড়কপথ এটি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ সড়কে চলাচল করে। কিন্তু র্দীঘদিন ধরে ভেঙে ধসে পড়া সেতুটিতে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এতে এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় আরও অনেকেই জানান, সেতুটি ভেঙে পড়ার কারণে এলাকার খেটে খাওয়া কৃষক-শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য, ফল-মূল, শাক-সবজি ও অন্যান্য ফসল বাজারে আনা-নেওয়া করতে পারছেন না তারা। ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাবুব মুর্শেদ বলেন, ১৯৮৭ সালে কে আর বাংলাদেশের অর্থায়নে ৯ মিটার র্দীঘ এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে বর্তমানে এ সেতুটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই সেতুটি পরিদর্শন করে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির প্রকল্প অনুমোদন হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, সড়কটি এলজিইডির। তবে সেতুটি চলাচলে অনুপযোগীর বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএম
