পিরোজপুরের পাড়েরহাটের স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ


পিরোজপুরের পাড়েরহাটের রাজলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই মধেই খুলে খুলে পড়ছে নির্মাণাধীন ভবনের কলামের পলেস্তারা। এ কারণে নির্মাণ কাজ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল কার্যালয়ের অধীনে ২ কোটি ৮১ লক্ষ ২২ হাজার ৪১১ টাকা ব্যয়ে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পিরোজপুরের ‘আলেয়া কন্সট্রাকশন’ নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়।
তবে কাজ শুরুর পর থেকেই এ ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সহ স্থানীয়রা।
এরপর শনিবার বিদ্যালয়ে চতুর্থ তলায় কলামের আবরণ খোলার পরপরই সেখানে কলামের পলেস্তারা খুলে খুলে পড়ে যাচ্ছিলো। ফলে কলামের রড বের হয়ে আসে। যেকোন সময় হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এই ভবনটি মান সম্মত কাজের মাধ্যমে গড়ে তোলা হোক এমনটাই দাবি শিক্ষক ও এলাকাবাসীর।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য বাবুল খান বলেন, বিদ্যালয়ের কাজের জন্য নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে বলে বিদ্যালয়ের কলামের পলেস্তারা খুলে খুলে পড়ছে। ঢালাই কাজে বালি ও সিমেন্ট খুবই কম ব্যবহার করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাই এ সমস্যা হয়েছে। আমরা চাই একটি মান সম্মত কাজের মাধ্যমে বিদ্যালয় ভবনের কাজ শেষ হোক।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শিব শংকর সাহা বলেন, বিদ্যালয় ভবনের কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। গ্রেড-ননগ্রেড রড দিয়ে পিলার ঢালাই এর কাজ করেছে। করোনা কালীন সময়ে আমরা বিদ্যালয়ে না থাকায় এই সুযোগে তারা এই নি¤œ মানের কাজ করে ভবনের কাজ শেষ করছে।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোস্তফা তালুকদার বলেন, আমরা বিভিন্ন ভাবে কয়েকবার উপর মহলে অভিযোগ দিয়েছি এই বিষয়ে। কোন কাজ হয়নি। আবার অভিযোগ দেয়ার কারণে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দেয়া হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আলেয়া কন্সট্রাকশনের মালিক নাসির শেখ জানান, মিস্ত্রিদের ভুলের কারণে এমনটা হয়েছে। ভবনের চতুর্থ তলার কলামের ঢালাই দেয়ার সময় মিস্ত্রি সঠিক ভাবে কাজ না করার জন্যই এ ভুল হয়েছে। তবে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা তিনি অস্বীকার করেন।
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিভা সরকার জানান, ঘটনা শোনার পরপরই একজন ইঞ্জিনিয়ারকে নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে। কলাম নির্মাণে নি¤œমানের কাজ হলে তা আবার করা হবে। কেন এই ঘটনা ঘটলো এ বিষয়ে ঠিকাদারের কাছে জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়ে পরবর্তীতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমবি
