ইউরোপে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ১২০


রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ১২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে কেবল জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলেই প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০০। এছাড়া এখনও সেখানে শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ইউরোপে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিম জার্মানির বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবারও জরুরি উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রাখেন।
রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রজার লেওয়েন্টজ জার্মান পত্রিকা বিল্ডকে জানিয়েছেন, মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে নিখোঁজদের তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে।
উত্তর পশ্চিম ইউরোপজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে জার্মানি ছাড়াও বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ডের মত কয়েকটি দেশ জুড়ে এই বন্যা দেখা দেয়। বেলজিয়াম থেকে অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বলা হচ্ছে, ইউরোপে গত কয়েক দশকের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। জার্মানিতে সবচাইতে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট এবং নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া নামে দু’টি রাজ্য। জার্মানিতে উদ্ধার ও সন্ধানকাজে সাহায্য করার জন্য ১৫ হাজার পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং জরুরি সংস্থার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় আরভাইলার জেলার কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ১৩০০ মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শুল্ড নামে একটি গ্রাম প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট-এ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কোলোনের কাছে এরফস্টাট-ব্লেজেম শহরে একসাথে অনেকগুলো বাড়ি ধসে পড়েছে।
অন্যদিকে বেলজিয়ামের লিয়েজ এবং নেদারল্যান্ডসের ম্যাস্ট্রিখটের মতো বেশ কিছু শহর ও গ্রামে বন্যার ঝুঁকির কারণে হাজার হাজার লোককে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
রাজনীতিবিদরা আকস্মিক এই বন্যার জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া ও এই কারণে ঘটা দুর্যোগের সংখ্যা আগামীতে আরও বাড়বে। তবে কোনো একটি ঘটনাকে দিয়ে এর ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। গোটা বিশ্ব আগামীতে এ রকম আরও নানান সংকটের মুখে পড়বে।
এমইউআর
