ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

Motobad news

আফগান দোভাষীদের সরিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র

আফগান দোভাষীদের সরিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: প্রতীকী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দু’দশক আগে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান শুরুর পর থেকে দেশটির যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদেরকে বিশেষ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হবে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র জেন সাকি বুধবার এক ব্রিফিংএ এ তথ্য জানিয়েছেন।

ব্রিফিংয়ে জেন সাকি বলেন, ‘তারা প্রত্যেকেই সাহসী মানুষ। আমরা তাদের নিশ্চিত করতে চাই যে, গত দু’দশক ধরে তারা আফগানিস্তান অভিযানে যে ভূমিকা পালন করেছেন, আমাদের কাছে তার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।’

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকে তালেবানগোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়তে থাকায় এতদিন আফগানিস্তানের যেসব নাগরিক মার্কিন বাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

পাশাপাশি, গত কয়েকদিনে তালেবানগোষ্ঠী দেশের বেশ কিছু সীমান্ত এলাকা নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হওয়ায় এই ঝুঁকি আরও গুরুতর রূপ নিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে উগ্র ইসলামপন্থি এই গোষ্ঠীর আক্রোশ থেকে তাদের রক্ষা করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশেষ অভিবাসী ভিসার আওতায় তাদেরকে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে আনা হবে। তারপর তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেসব ঘাঁটিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ৫০০ দোভাষীকে সরিয়ে আনা হবে, পরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইট টাওয়ারে বিমান হামলাকারী আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা নেটওয়ার্ককে নির্মূল করতে ওই বছরই আল কায়দার তৎকালীন হেডকোয়ার্টার আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই অভিযানে উৎখাত হয় দেশটিতে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার, যাদের বিরুদ্ধে আল কায়দা নেটওয়ার্ককে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ছিল।

এর প্রায় আঠার বছর পর ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়ে তালেবান নেতাদের। সেই চুক্তি অনুযায়ী, তালেবান গোষ্ঠী আল কায়দা নেটওয়ার্কসহ অন্য কোনো বিদেশী জঙ্গি সংগঠনকে আশ্রয় দেওয়া বা সহযোগিতা না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। অন্যদিকে ট্রাম্প কথা দেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

২০২০ সালে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হওয়ার পর সেই এ বিষয়টি আরও গতি পায়। চলতি বছর মে মাসে বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২০২১ সারের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করা হবে, পরে এই সময়সীমাকে আরও কমিয়ে আগস্টের ৩১ তারিখে আনেন তিনি।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, ‍যিনি ২০০১ সালে আফগানিস্তানে অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন- সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেশটির সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে চলতি সপ্তাহে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুশ বলেন, মার্কিন সেনা সদস্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে আসার পর দেশটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ তালেবানগোষ্ঠীর পরিকল্পিত হত্যার শিকার হবে।


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন