ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

হামলার পেছনে ইউসিবি গ্রুপ, মোল্লা কলেজের ক্ষতি ৭০ কোটি: অধ্যক্ষ

হামলার পেছনে ইউসিবি গ্রুপ, মোল্লা কলেজের ক্ষতি ৭০ কোটি: অধ্যক্ষ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজসহ বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলায় ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) প্রায় ৭০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফকালে তিনি এ দাবি করেন।

অধ্যক্ষ নয়ন বলেন, শিক্ষার্থীদের হামলায় আমাদের ১২তলা ভবনের কোনো কাঁচ আর অক্ষত নেই। ৫টি লিফট, কম্পিউটার ও সায়েন্স ল্যাব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলাকারী শিক্ষার্থীরা নগদ টাকা, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, সার্টিফিকেট, ৩০০ এর উপরে ফ্যান, প্রায় ৩০টির মতো ল্যাপটপ, অসংখ্যা কম্পিউটারসহ মূল্যবান ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস লুট করেছে। এতে করে প্রায় ৭০ কোটির মতো ক্ষতি হয়েছে।
 
এ সময় তিনি ঘটনার জন্য ন্যাশনাল মেডিকেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি করেন।
 
এছাড়া শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইউসিবি নামের একটি গ্রুপ থেকে হামলার উসকানি ও ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ নয়ন।
 
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এমন করতে পারে আমরা ভাবিনি। আমাদের সব ধবংস করে দিয়েছে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত থেকে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের কলেজমুখী করার বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে কুচক্রি মহল কাজ করছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশ অন্যদিকে চলে যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা আমরা চাই না।
 

হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ ভূমিকা রাখেনি বলেও অভিযোগ করেন ডিএমআরসি অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, সকাল থেকেই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু হামলার সময় তারা দূরে থেকে পরিস্থিতি দেখেছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
 
যেভাবে সংঘর্ষের শুরু
 
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসকের গাফিলতিতে বন্ধুর মৃত্যুর অভিযোগে রোববার দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল ঘেরাও কর্মসূচি পরে রূপ নেয় সংঘর্ষে। এ সময়, হাসপাতালটির পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজেও ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের ভূমিকা নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ উঠে।


রোববার দুপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে দলে-দলে আসতে থাকেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের চিকিৎসায় গাফিলতি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে সোমবার মৃত্যু ঘটে অভিজিতের। ওই ঘটনার বিচার চাইতে হাসপাতাল ঘেরাও ও ভাঙচুর করেন উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা।
 
 
এক পর্যায়ে হাসপাতালের মূল ফটক ছেড়ে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের দিকে এগিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। মৃত্যুর বিচার চেয়ে হাসপাতাল ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রূপ নেয় কলেজে হামলায়। এর আগে দুই দফা অবস্থান নিলেও ন্যাশনাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল।
 

হামলার সময় পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন। ছবি ভিডিও থেকে নেয়া


হামলার সময় ওই দুই কলেজেই পরীক্ষা চলছিল। ভাঙচুর শুরু হলে পরীক্ষার্থীরা এলোপাতাড়ি এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে জড়ো হতে থাকেন কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। হামলা-ভাঙচুরের পাশাপাশি অর্থ লুটপাটের অভিযোগ করেন তারা। উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ঘটনাস্থলে শুরু থেকেই পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও সংঘর্ষ ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ থাকলেও হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে তারা অবগত নন বলে জানান লালবাগ জোনের পুলিশ কর্মকর্তা।


দুই কলেজের পাশাপাশি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ভেতরেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন