মঠবাড়িয়ায় দলিল লেখকের সনদ বাতিল


পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে এক ব্যক্তির জমি অন্যজনের নামে দলিল করে দেয়ার অভিযোগে প্রদীপ রঞ্জন মিত্র নামে এক দলীল লেখকের সনদ (নং-২২৩১) বাতিল হয়েছে।
তবে সনদ বাতিল হবার পরেও বহাল তবিয়াতে কাজ করায় ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছেন হয়ারানীর শিকার হওয়া ওই পরিবারটি এবং কতিপয় দলিল লেখক। তাদের প্রশ্ন কোন অদৃশ্য শক্তির বলে প্রদীপ রঞ্জন মিত্র এখনও কাজ করছেন।
ভুক্তভোগী উপজেলার বড়শৌলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে শিবলী মোল্লা শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, ২০১৩ সালে তিনি এবং এমাদুল হক খোকন, একই এলাকার শশীকান্ত ও শ্রীকান্ত এর নিকট থেকে ১৩৪ শতক জমি ক্রয় করেন।
২০০৫ সালে চন্দ্রকান্ত এর ওয়ারিশ থেকে সঞ্জিব মাঝি ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই খতিয়ানে আর কোন সম্পত্তি নাই। পরবর্তিতে দলিল লেখক প্রদীপ রঞ্জন মিত্র জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন দাগ বসিয়ে চন্দ্রকান্ত এর নামে ১৪২ শতক সম্পত্তির খতিয়ান তৈরি করেন এবং তার ওয়ারিশ শুনীল চন্দ্র কির্তুনীয়াকে দাতা বানিয়ে ওই বড়শৌলা গ্রামের হারুন হাওলাদারের ছেলে জাহাঙ্গীরের নামে গত বছরের ২৬ জানুয়ারী ৬২৩ নম্বর সাব-কবলা দলিল মূলে ১৪২ শতক সম্পত্তি ক্রয় করিয়ে দেন।
পরে দলিল লেখক প্রদীপ রঞ্জন আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য স্ব-প্রনোদিত হয়ে জাহাঙ্গীরকে দিয়ে আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার নোটিশ আসলে বিষটি চ্যালেঞ্জ করি এবং মহাপরিদর্শক, নিবন্ধন অধিদপ্তর বরাবর অভিযোগ দায়ের করি। নিবন্ধন অধিদপ্তর তদন্তের জন্য জেলা রেজিস্ট্রার, ঝালকাঠীকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা ও পিরোজপুর জেলা রেজিস্ট্রার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে খতিয়ান, খাজনা, দাখিলা জাল ও বিকৃত করে তর্কিত ৬২৩/২৩ নং দলিল সম্পাদন করা হয়েছে মর্মে প্রমান পাওয়ায় এবং দলিল লেখকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় দলিল লেখক প্রদীপ রঞ্জন মিত্রের সনদ বাতিল করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রদীপ রঞ্জন মিত্র বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা অন্যায়ভাবে আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছেন। অফিসে দলিল চেক করার পর দলিল লেখকের কোন দায় থাকে না। সমস্ত দায় সাব রেজিস্ট্রার অফিসের। বর্তমানেও আমি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পাশে দলিল লেখকের কাজ করছি।
মঠবাড়িয়ার বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার পারভেজ খান বলেন, বিধিনুযায়ী দলিল লেখকের উপর দায় আছে, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কোন দায়ের মধ্যে পরে না। দলিল সম্পাদনকারী (সাবেক) সাব-রেজিস্ট্রার জাহিদ হাসান বলেন, দলিল সম্পাদনে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কোন দায়বদ্ধতা নেই।
এইচকেআর
