নাসির ‘ভালো লোক’ সংসদে মুজিবুল হক চুন্নু


নায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ একজন ভালো লোক। তাই প্রকৃত দোষীদের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু- এমপি।
মঙ্গলভার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদে সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু এ কথা বলেন।
এর আগে গতকাল সোমবার সংসদে বিএনপির হারুনুর রশীদ পরীমণির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেয়ার দাবি তোলেন। এর জবাব দিতে গিয়ে মঙ্গলবার চুন্নু বলেন, ‘গতকাল সংসদে একজন মাননীয় সদস্য নায়িকা পরীমণির জন্য বিচার চেয়েছেন।
একজন গ্রেফতার হয়েছেন। আমি তাকে চিনি। উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সেই লোকটি জাতীয় পার্টি করেন। তিনি ভালো লোক। মিডিয়াকে অনুরোধ করবো, মিডিয়ার কারণে অনেক সময় ভালো লোক…আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী…।’ এ পর্যায়ে চুন্নুর জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় তার মাইক বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে নায়িকা পরীমণিকে হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ কে। গত ১০ জনু রাতে ঢাকার আশুলিয়া বোট ক্লাবে নাসির উদ্দিন পরীমনিকে জোর করে মদ খাইয়ে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ পরীমণির।
তবে নাসির উদ্দিনের মত একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পরীমণির করা এমন অভিযোগ নিয়ে অনেকটা কানঘুষাও শোনা যাচ্ছে। এর পেছনে কোন রহস্য লুকায়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণেও তাকে ফাঁসানো হতে পারে। এসব প্রশ্নের উত্তর একমাত্রা প্রশাসনের তদন্তেরই বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী বিশেষ মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘নাসির উদ্দিন মাহমুদের পরিচয় তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে।
বরিশাল নগরীর বগুরা রোডের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন মাহমুদ রাজনীতি শুরু করেন শিক্ষাজীবন থেকেই। ওই সময় তিনি এসএম হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরশাদের দলে যোগ দিয়ে রাজনীতি আরও পাকাপোক্ত করেন। এরপর তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। পার্টির একজন দক্ষ এবং মেধাবী নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
বর্তমানে তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি বেশ কয়েকবার উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর গত ২০১৩/১৪ সালের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য হন। ঢাকা বোট ক্লাবের একবার সভাপতিও ছিলেন তিনি। অবশ্য তিনি এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও।
রাজনৈতিক মহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘নাসির উদ্দিন মাহমুদ এর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে ইতোপূর্বে সে ধরনের কোন আচরণ তার মধ্যে পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি একজন ভদ্র সভাবের লোক। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং হত্যা চেষ্টার অভিযোগ সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখার দাবিও তুলেছেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা।
কেআর
