‘টেংরা-সকিনা’য় পার ১০ বছর, বাঁচেনি একটি বাচ্চাও


বরগুনার তালতলীর টেংরাগিরি ইকোপার্কে কুমির প্রজননকেন্দ্র স্থাপনের ১০ বছর পার হয়েছে। তবে একটিও বাড়েনি কুমিরের সংখ্যা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলেও কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাবে বাঁচানো যায় না কুমিরের বাচ্চা। তবে বনবিভাগের দাবি, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে কুমিরের বাচ্চা বাঁচানো যাচ্ছে না।
জানা যায়, ২০১২ সালে টেংরাগিরি ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়। তখন পার্কের মধ্যে দুটি কুমির নিয়ে চালু করা হয় কুমির প্রজননকেন্দ্র। টেংরাগিরি বনের নামে পুরুষ কুমিরটির নাম রাখা হয় ‘টেংরা’। আর সকিনা গ্রামের পাশে এ বনাঞ্চল হাওয়ায় স্ত্রী কুমিরটির নাম রাখা হয় ‘সকিনা’। প্রজননকেন্দ্র স্থাপনের ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। এসময়ে ডিম ফুটে বাচ্চাও দিয়েছে কুমির দুটি। তবে বাঁচেনি একটিও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর কুমির ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। কিন্তু বনবিভাগের লোকজন কুমিরের বাচ্চার সঠিকভাবে লালন-পালন না করায় একটিও এখন পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি।
সোনাকাটা এলাকার রাজু, হাসান, মেহেদিসহ একাধিক বাসিন্দা বলেন, ‘বনবিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিকতার অভাব ও উদাসীনতায় ১০ বছরেও কুমিরের কোনো বাচ্চাকে বাঁচানো যায়নি। অথচ বাচ্চাগুলো বেঁচে থাকলে রপ্তানির মাধ্যমে রাজস্ব আসতো। পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করা যেতো।’
কুমিরদের ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। সকিনা এলাকার কে এম রিয়াজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রজননকেন্দ্রের কুমির দুটিকে ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয় না। ৩-৪ দিন পর পর দুটি ব্রয়লার মুরগি খেতে দেওয়া হয়। যা খেয়ে কুমির দুটি কোনোমতে বেঁচে আছে।’
বরগুনা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি আরিফ রহমান বলেন, টেংরাগিরি ইকোপার্কের কুমির প্রজননকেন্দ্রে কুমিরের সংখ্যা বাড়লে পর্যটনশিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হতো।
তবে বনবিভাগের তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রজননকেন্দ্রে বাচ্চা দেওয়ার পরে পুরুষ কুমিরটি বাচ্চা খেয়ে ফেলে। বাচ্চা সংগ্রহ করে নার্সিংয়ের জন্য যে ধরনের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল দরকার তা আমাদের নেই। তাই বাচ্চা বাঁচাতে পারছি না।
কুমিরকে নিয়মিত খাবার না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দেওয়া হয়। নিয়মিত খাবার না দিলে ১০ বছর বাঁচিয়ে রাখা যেতো না।’
এইচকেআর
