বরগুনায় ৬৫ স্থানের ২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে


বরগুনায় ছয়টি উপজেলার উপকূলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ চলছে। পায়রা ও বিষখালী নদের তীর ঘেঁষে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কয়েক কিলোমিটার অংশে ব্লক বসানো হচ্ছে।
আর পায়রা নদীর ভাঙনের কবলে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বরগুনার সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। বছরের পর বছর এমন ভাঙনে ফসলি জমি, ৫০ বছরের পুরাতন বাজার সবকিছু চলে গেছে আগ্রাসী পায়রা নদীর গর্ভে। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ বিলীন হয়ে প্লাবিত হতে পারে ১০টি গ্রাম। তাতে ক্ষতি হবে ফসলি জমি, মৎস্য চাষ, পানিবন্দী হয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষ।
আতঙ্কে দিন কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। টেকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
বরগুনার সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের পালের বালিয়াতলী গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ ইসমাইল মৃধা বলেন, জীবনে সাক্ষী হয়ে আছেন অগণিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের। খরস্রোতা আগ্রাসী পায়রা নদীর ভাঙনে চোখের সামনে বিলীন হতে দেখেছেন ফসলি জমি ৫০ বছরের পুরাতন বাজার।
এক সময় সেই বাজারে তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও সবকিছু হারিয়ে এখন কোনোমতে সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ঠাঁই হয়েছে বেড়িবাঁধের ওপর। সেই বেড়িবাঁধ ও এখন বিলীন হওয়ার পথে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, বরগুনা সদরের পায়রা নদীর পাড়ের পালের বালিয়াতলী এলাকার এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে এখন খুবই নাজুক অবস্থা। বাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। ঝড় জলোচ্ছ্বাস দেখা দিলে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। বড় কোনো জোয়ারের চাপ বা ঘূর্ণিঝড় হলে নাজুক এই বাঁধ বিলীন হয়ে প্লাবিত হবে ১০টি গ্রাম, নোনা পানি ঢুকে ক্ষতি হবে ফসলি জমির। এই বেড়িবাঁধের কাছে রয়েছে শত শত বছরের পুরাতন রাখাইন পল্লি। ঐতিহ্য হারাবে সেই রাখাইন পল্লিটি।
চার বছর আগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৮০০ মিটার বেড়িবাঁধ ব্লক দিয়ে করা হলেও ভাঙনকবলিত বাকি অংশ এখনও হুমকির মুখে। আমাদের দাবি টেকসই মজবুত বেড়িবাঁধের।
বরগুনা সদর ৯ নম্বর এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বারবার ধন্না দিলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। আগামী ছয় মাসেও এ সমস্যার সুরাহা হবে বলে তার মনে হচ্ছে না। এরই মধ্যে যেকোনো ধরনের বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, মো. নুরুল ইসলাম জানান, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের মাধ্যমে ব্লক দিয়ে বাঁধ টি করা হবে। ইমারজেন্সি কাজ করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বাজেট পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
বরগুনা জেলার ৬৫ স্থানে প্রায় ২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ কমবেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
এএজে
