বাউফলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা কেউ জানেন না


ঘটনার দিন ছিল রোববার (২০ নভেম্বর)। ছিল বাজারের দিন। ওই দিনই দুপুর দেড়টার দিকে ওই বাজারেরই একটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনা দেখিয়ে দ্রুত বিচার আইনের ধারায় মামলা করা হয়েছে। অথচ ওই দোকানের আশপাশের দোকানিরা তা জানেন না। দোকানিরা বলছেন সাজানো ঘটনা। ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না।
এমন ঘটনা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কদনক দিয়া বাজারের।
ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,কনকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে মিঠুর সঙ্গে কনকদিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. মিজান কাজীর বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে শফিকুলের ছোট আসাদুলকে (৩৮) ২০ নভেম্বর দুপুরে মারধর করে মিজান কাজীর ছেলে মো. সিজানের (২২) নেতৃত্বে কয়েকজন।
অভিযোগ রয়েছে,ওই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে কনকদিয়া বাজারে মেসার্স কাজী এন্টারপ্রাইজ পার্সের দোকান ভাঙচুরের ঘটনা সাজানো হয়েছে। এ ঘটনায় মিজান কাজী বাদী হয়ে ২৩ নভেম্বর পটুয়াখালী দ্রুত বিচার অপরাধ আদালতে শফিকুলের দুই ভাই মো. টিপু (৪২) ও মো. আসাদুলসহ (৩৮) তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা নম্বর ১৬৫/২০২২। মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে মিজান কাজীর দুই ছেলেসহ তাঁর স্বজনদের। কোনো দোকানীকে স্বাক্ষী করা হয়নি।
সরেজমিনে স্থানীয় লোকজন মিজান কাজী ও তাঁর ছেলে সিজানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে সাহস পান না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন,‘দোকান ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। সিজানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। তাঁরা প্রকাশ্যে লাঠিসোঁটা নিয়ে ঘোরাঘুরি করে।এই ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না।’
আরেক দোকানি বলেন,‘ওই দিন ছিল বাজারের দিন। যে সময় (দুপুর দেড়টা) দোকান ভাঙচুরের কথা বলা হচ্ছে। ওই সময় ভাঙচুর করলে বাজারের সবাই দেখতো। তিনিও দোকানে ছিলেন। ভাঙচুরের কোনো ঘটনা তিনি দেখেননি।’
বাজার মসজিদের এক মুসুল্লী বলেন,‘শুনেছি আসাদুলকে মারধর করা হয়েছে। তা বাজার থেকে একটু দূরে। তবে ওই সময় (দুপুর দেড়টা) বাজারে দোকান ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে শ্রমিক লীগ নেতা মিজান কাজী বলেন,দোকান ভাঙচুরের ঘটনা সত্য।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন কোনো মারধর করা হয়নি। দোকান ভাঙচুর করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসাদুলকে চার-থাপ্পর দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন,‘গোপনে তদন্ত করলে আসল সত্য বেড়িয়ে আসবে, ভাঙচুরের ঘটনা সাজানো।’
এইচকেআর
