ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

Motobad news
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন

পথ আটকে জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখা যায় না

পথ আটকে জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখা যায় না
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বাস, লঞ্চ, ট্রেন–সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করার পরেও খুলনার সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতির উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেখেন, হামলা, মামলা, হয়রানি করে এবং পথ আটকে জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখা যায় না। তারই প্রমাণ আজকে দিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। 

শনিবার বিকেলে খুলনা শহরের ডাকবাংলা এলাকার সোনালী ব্যাংক চত্বরে দলের বিভাগীয় গণসমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম সরকারের উদ্দেশে একথা বলেছেন। এই সমাবেশ ঘিরে গত দুই দিনে খুলনার বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ও বাসা-বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ঠেকাতে দুই দিন ধরে খুলনা অভিমুখী সব ধরনের গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ সব ঘটনার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সীমাহীন বাধা দিয়েছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের ভাইদের বলতে চাই, আপনাদের ফোন করলে বলেন, না সব ঠিক আছে। আজকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা তো বিএনপির সমাবেশে বাধা দেই না। বরঞ্চ সহযোগিতা করি।’ কী সহযোগিতা করেছেন– স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশে সে প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্টেশনে নামার পরে আমাদের ছেলেদের গ্রেপ্তার করেছেন। আমাদের চোখের সামনে আমাদের ছেলে–মেয়েদের কুপিয়েছে, আপনারা কিছুই বলেননি। বরঞ্চ খেয়াঘাটে গ্রেপ্তার করেছেন, আহত করেছেন। যাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারে তার ব্যবস্থা করেছেন। তার পরেও তারা পারেনি।’

নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা অসাধ্যকে সাধন করেছেন। তিন দিন ধরে জলেস্থলে সব পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। দুই দিন ধরে বাস বন্ধ, লঞ্চ বন্ধ করেছে, নৌকা বন্ধ করেছে, খেয়াঘাট বন্ধ করেছে। কিছুই চলতে দেয়নি। তার পরেও কি আপনাদের গণতন্ত্রের যে আকাঙক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সে লড়াইয়ে বাধা দিতে পেরেছে? ইতিহাস বলে কোনো দিন জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে শুধু শক্তি দিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মানুষকে দমিয়ে রাখা যায় না। সেটাই আপনারা আবার প্রমাণ করেছেন।’

বিএনপির মহাসচিব জানান, গত দুই-তিন দিনে পাঁচশ’র বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাজারো নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। রূপনগরে ২০ জন গুলিবিদ্ধ, কেশবপুরে ১৫ জন গুলিবিদ্ধ, মংলায় ট্রলারে আসা প্রায় ১০০ জন নেতা-কমীকে আহত করে ট্রলার ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। রূপসা-তেরখাদা-দিঘলয়িায় ১০০ নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। বাগেরহাটের মিছিলে ৭০ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। গ্রেপ্তার করেছে ৫০ জনকে। নগরের ৫ ও ৭ নম্বর ঘাটে আসা ট্রলার ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন কমীকে এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। খুলনা রেল স্টেশনে নেতা-কর্মীদের মারধর করা হয়েছে, গত দুই দিনে হোন্ডা মহড়া দিয়েছে হকিস্টকি উঁচিয়ে। রামপাল-কাটাখালীতে হামলা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলছি, এই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সুতরাং আর কোনো কথা নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না দিলে কোনো নিবাচন হবে না। সে জন্য এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অনেক ক্ষতি করেছেন। অনেক ক্ষতি করেছেন এই ১৫ বছরে– আমাদের যা কিছু অর্জন, সব কেড়ে নিয়েছেন, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট করেছেনে। ব্যাংকিং, শেয়ার বাজার, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। বিদ্যুতের উন্নয়নের নামে প্রতিবছর ২৮ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছেন। তারপরেও দিনে ৪-৫ বার করে লোডশেডিং হচ্ছে।’

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নিতাই রায় চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন প্রমুখ।


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন