কাল থেকে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি


বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে বিএনপির বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, এখন এই গণবিরোধী সরকারকে হঠাতে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই আন্দোলনে এক দফা দাবি, সেটা হচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট, অবৈধ সরকারের পতন। এই সরকারকে পদত্যাগ করাতে না পারলে দেশের মানুষ না খেয়ে মরবে, গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে, তা চিরতরে কবর রচনা হবে। এ জন্য বিএনপির সব নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। এই আন্দোলন বিএনপির একার আন্দোলন নয় এটা জনগণের আন্দোলন। তাই জনগণকে এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে।
তেলের মূল্য বৃদ্ধি, সরকারের গুম এবং ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে আজ সোমবার থেকে দেশের সকল জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করবে বিএনপি। এই কর্মসূচি সফল করতে বরিশালে বিএনপির উদ্যোগে বিভাগীয় প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার বিকেলে নগরের সদর রোডে কীর্তনখোলা মিলনায়তনে এই প্রতিনিধি সভায় বরিশাল বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য, সম্বাব্য প্রার্থীরা অংশ নেন। সভা চলে রাত ৮ টা পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান। সভাটি সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, দেশে আজ নুন্যতম নাগরিক অধিকার নেই। সভা-সমাবেশ ও বাক্স্বাধীনতা হরণ করে সরকার যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, তার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ভোলায় পুলিশি হামলা। সরকার স্বার্থরক্ষার জন্য দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে নিজেদের কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করার যে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে, দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তাঁরা বলেন, ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের আয়োজন। দেশে গড়ে সাড়ে ১১ বা ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। অথচ দেশে প্রায় অর্ধেক সময় লোডশেডিং থাকে। তার মানে পাঁচ থেকে সাত হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না। কিন্তু জনগণের টাকা গেল কোথায় ? এর হিসাব দিতে হবে। তাঁরা বলেন, এই টাকার হিসাব চাওয়ায় সরকার গুলি করে মানুষ মারছে। এই হত্যার জবাব সরকারকে দিতে হবে।
বক্তারা বলনে, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেশের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। গত ১২ বছরে কয়েকশ বিএনপি নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে গুম করেছে, হত্যা, নির্যাতন করে স্বাধীন দেশকে হত্যা, গুম আর আতঙ্কের নরকে পরিণত করেছে। এই দুঃশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে না পারলে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র সবকিছু ভুলুণ্ঠিত হয়ে যাবে।
সভায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশকে সফল করতে বিভিন্ন জেলা, উপজেলার প্রতিনিধিরা মতামত তুলে ধরেন। একইসঙ্গে গ্রাম পর্যায়ে আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেওয়া, এসব আন্দোলনে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করাসহ নানা মতামত তুলে ধরেন। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আরতাফ হোসেন চৌধুরী, নাজিম উদ্দীন আলম, নুরুল ইসলাম নয়ন, হাসান মামুন, হায়দার আলী, মাহবুবুল হক, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মেজবাহ উদ্দীন ফরহাদ, বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ।
এএজে
