ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

Motobad news

ব্রিজ যেন মরন ফাদ, এলাকাবাসীর ভোগান্তি 

ব্রিজ যেন মরন ফাদ, এলাকাবাসীর ভোগান্তি 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনা জেলার সদর উপজেলার ৬ নং বুড়িরচর ইউনিয়নের উপজেলা বাজার থেকে ছোট লবনগোলা বেরীবাধ  পর্যন্ত ১.৫০ কিলোমিটারের রাস্তা মাঝখনে রয়েছে একটি ব্রিজ। বুড়িরচর ইউনিয়নের উপজেলা বাজারসংলগ্ন  সড়কের ব্রিজটি মাঝের একাংশ ৮ বছর ধরে ভেঙে আছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন কালভার্ট নির্মাণের কোনো পরিকল্পনাই দেখা যাচ্ছে না।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর আগে এ কালভার্টটির পাটাতনের মাঝখান ভেঙে যায়। এর পর থেকে এই ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অটোরিকশা, ভটভটিসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দের কিলোমিটার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কয়েক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজটি ব্যবহার করতে হচ্ছে এই এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের উপজেলা বাজার থেকে ওয়াপদা বেরিবাঁধ পর্যন্ত ১.৫০ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটির সাথে এই ব্রিজটি করা হয় ১৫ বছর আগে। এরপর এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্রিজটির মাঝের পাটাতনের অংশ ভেঙে পড়ে আছে। ইঞ্জিনচালিত ট্রাকের কারনে অনেক আগে সাইড ওয়ালও ভেঙে গেছে।  যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। চালকরা এই অংশ পার হচ্ছেন সাবধানে। এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ গ্রামের হাজার মানুষ মানুষ শহরে যাতায়াত করে। ব্রিজের বেহাল দশার কারণে পণ্য পরিবহন ও প্রসূতি ও রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে বিপাকে পড়তে হয় এলাকাবাসীর।

৬ নং বুড়িরচর ইউনিয়নের ছোট লবনগোলা গ্রাম রয়েছে পর্যটন আপার সম্ভাবনা। ছোট লবনগোলায় রয়েছে গহীন ম্যানগ্রাভ বন, যেখানে মাইলের পর সবুজের সমারোহ।  এই ব্রিজটি সংস্কার করা হলে এলাকার বাসীর আয় রোজগার ও বাড়বে তাই এলাকাবাসী এই রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা হয়।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক শাহীন ফকির সিটি বলেন, আমি কামরাবাদ টু বরগুনা রুটে অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাই।আমি গত বছর  লোন নিয়ে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে এই অটোরিকশাটি কিনেছি। কিন্তু এই ব্রিজটি খারাপ হওয়া কারনে রাতে গাড়ীটি বাড়িতে নিয়ে রাখতে পারিনা। ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা বাজারে রেখে যেতে হয়।


আরেক স্থানীয় আলী হোসেন  বলেন, ২০ বছর আগে যখন আমি ছোট তখন এই ব্রিজটি নির্মান করা হয়। প্রতিদিন আমরা কয়েক শত ছাত্র- ছাত্রী এই রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজে যাতায়াত করি। ব্রিজটি ভাঙ্গা থাকার কারনে কোনো গাড়ি এই রাস্তায় আসে না,অতএব পুরো রাস্তাটা আমাদের পায়ে হেটে যেতে হয়। এলাকার কোনো লোক হঠাৎ অসুস্থ হলে একটা এ্যাম্বুলেন্স ও এই রাস্তা দিয়ে আসতে পারে না। আমরা অতি দ্রুত সম্ভব এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাই। 


স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসাঃ আয়সা সিদ্দিকা ডলি জানান, এ এলাকায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আছে যারা বরগুনার বিভিন্ন কলেজে লেখাপড় করে। কিন্তু ব্রিজটির অবস্থা বেহাল হওয়ার কারনে ১.৫০  কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে তারপর উপজেলা থেকে গাড়িতে করে কলেজে যায়। বৃষ্টির সিজনে সৃষ্টি হয় আরও দুর্দশা।

উপরোক্ত বিষয়ে বুড়িচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগ থেকেই অনেকবার এই ব্রিজটি পাশ করানোর জন্য চেষ্টা করেছি। ব্জিজটি নিয়ে লবনগোলা গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই৷ আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে একাধিক কথা বলেছি। তারা আমাকে আস্বস্ত করেছেন যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে এলজিইডি বরগুনার উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ অহিদুল ইসলাম  বলেন, ভাঙা এ ব্রিজটি নতুনভাবে নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। যদি অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে তাহলে শিগগিরই এ ব্রিজটি নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন