ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

Motobad news

আমতলীতে ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বেহাল দশা

আমতলীতে ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বেহাল দশা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বরগুনার আমতলী- উপজেলার ৩০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মধ্যে ৩০টি ভবন দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এখন বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। ভবন ধসসহ অধিকাংশ ভবনের দরজা জানালা খুলে গেছে, ছাদে ফাটল ধরেছে, পলেস্তারার খসে পড়েছে। বৃষ্টির সময় ছাদ চুয়ে পানি পরে।এ অবস্থায় রোগীদের সঠিক ভাবে সেবা দিতে পারছে না সিএইচসিপিরা। 

ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের স্বাস্থ্য সেবা। আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৯ সালে স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমতলী উপজেলায় মোট ৩০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে। কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মানের পর ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এর কার্যক্রম সম্পূর্ন বন্ধ করে দেয়। 

২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৭ বছর ভবনে কোন কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় ভবনগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষতায় এসে পুন:রায় কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলে এ ভবনগুলো কোন রকম ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে কার্যক্রম চালু করা হয়। এর মধ্যে অনেক ভবনে পলেস্তারার খসে পড়েছে, ভবনের গায়ে এবং ছাদে ফাটল ধরেছে। ছাদে ফাটল ধরায় অনেক ভবনের ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। বর্ষা আসলে ভবনের ভিতরে বসে রোগী দেখা যায় না। পানিতে সারা ভবনের মেজ তলিয়ে যায়। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানি বাজারের কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি ২০২০ সালে দেয়াল এবং বিমসহ ধসে পরে। ফলে তখন থেকেই এই ভবনটি আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহ রাখতে নিরুপায় হয়ে সিএইচপিসি খেকুয়ানি বাজারের একটি ক্লাব ঘরে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মামুন মৃধা  জানান, ৩ বছর আগে খেকুয়ানি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনটি ধসে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সেবা ঠিক রাখতে আমরা খেকুয়ানি বাজারের একটি ক্লাব ঘরে সিএইচসিপিকে বসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।  

সিএইচ সিপিসি আরিফ জানান, বছরের পর  বছর ধরে কমিউনিটি কিলনিকের বেহাল দশা। বর্ষার সময় রোগী দেখতে গিয়ে ছাদ চুয়ে পানি পড়ায় ভিজে যাই। এভাবে আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের গেড়াবুনিয়া, সোনাখালী, আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চরকগাছিয়া, ভায়লাবুনিয়া, তারিকাটা, হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া হাট, টেপুরা, চাওড়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া, চন্দ্রা, কাউনিয়া, আমতলী সদর ইউনিয়নের কল্যানপুর, মানিকঝুড়ি, চলাভাঙ্গা, পশ্চিচিলা গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোছখালী, কুকুয়া ইউনিয়নের চরখালীসহ আমতলী উপজেলার ৩০টি কমিউনিট ক্লিনিকের ভবন দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

ভবনগুলো সংস্কারেরও কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আবদুল মুনয়েম সাদ জানান, আমতলী উপজেলায় ৩০ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন রয়েছে এর মধ্যে অধিকাংশ ভবন ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন সম্পূর্ন ব্যাবহার অনুপযোগী হয়েছে সেগুলোর ভবন নতুন করে নির্মান এবং অন্য গুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। 

বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক জানান, আমতলী উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। এগুলো সংসকারের জন্য উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠানো হয়েছে। যেগুলো সংস্কার করলে ঠিক হবে সেগুলো সংস্কার করা হবে। এবং যেগুলো নতুন ভাবে নির্মান করা প্রয়োজন সেগুলোর জন্য আলাদা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে কার্যক্রম শুরু করা হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন