স্বাস্থ্যে এবার ৭৫০ কোটি টাকার কেনাকাটার প্রক্রিয়া


দেশে করোনার শুরুর দিকে স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় বড় ধরনের যে কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে এসেছে, তা থেকে দায়মুক্তি পেতে পথ খুঁজছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কেনাকাটার ৩৪৩ কোটি টাকার বিল অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সেই বিল পরিশোধে আপত্তি বা সেই অনিয়মের দায় নিতে নারাজ এখন। বিষয়টি সুরাহার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদসচিবসহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় চলতি মাসের ২ তারিখ চিঠি পাঠিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব ও সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান। তিনি গত বছরের ৩ জুন সিএমএসডির পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার আগে এসব কেনাকাটা হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
তবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন অনিয়মের কেনাকেটার ওই বিল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র মতে, সচিবের দপ্তর মনে করছে, বকেয়া বিল পরিশোধ করে দিলেই বিষয়টি আর আলোচনায় থাকবে না এবং প্রসঙ্গটি ধামাচাপা পড়ে যাবে।
আগের এই বড় দুর্নীতির রেশ কাটতে না কাটতেই এখন আবার প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকার কেনাকাটার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নতুন একটি চক্র এই কেনাকাটা নিয়ে ভেতরে-ভেতরে শুরু করেছে নানামুখী তৎপরতা। কিছু ক্ষেত্রে আগের মতোই অনিয়মও ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বর্তমান সচিব লোকমান হোসেন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক প্রভাবশালী কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসব কেনাকাটায় সুযোগ পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে অতিরিক্ত সচিবের আপত্তি সত্ত্বেও আগের ওই অনিয়ম ও দুর্নীতি করা কেনাকাটার বিল পরিশোধে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জানা গেছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবাসচিবের একাধিক বৈঠক হয়েছে বলেও মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া ওই দুর্নীতির পুরো বিষয় ধামাচাপা দিতে বর্তমান সচিবের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে অসংগতিপূর্ণ, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কেনাকাটার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত রয়েছে অতিরিক্ত সচিবের চিঠিতে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেনের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এমবি
