উচ্চ জোয়ারে বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে মানুষ

পূর্ণিমার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রধান তিনটি নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। উচ্চ জোয়ারে সদর উপজেলার বরইতলা ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে থাকায় যানবাহন ও মানুষকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণিমার প্রভাবে বিষখালী, বলেশ্বরের মোহনায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৬০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে। বরগুনা সদর উপজেলার অংশে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। শনিবার রাতের স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিষখালী-বলেশ্বর এই দুই নদ-নদীতে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে উচ্চ জোয়ারে বরইতলা ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। ফলে শিশু ও নারী-পুরুষেরা প্রায় কোমরসমান পানি পেরিয়ে পন্টুন থেকে তীরে উঠছেন। আবার কখনো নৌকায় করে যাত্রীদের পার করছেন স্থানীয় জেলেরা। মোটরসাইকেল ও ট্রাক ফেরির পন্টুন থেকে রাস্তায় ওঠার সময় পানিতে আটকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। উচ্চ জোয়ারের কারণে সদর উপজেলার পোটকাখালী, বাওয়ালকার, বরইতলা, পশ্চিম গোলবুনিয়া, ডালভাঙা এলাকার বাঁধের বাইরে বসবাস করা মানুষের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে।
পোটকাখালী এলাকার বাসিন্দা রাসেল বলেন, জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এখন প্রতিদিনই রাত-দিন দুইবার করে পানিতে ঘর তলিয়ে যাবে। এতে অনেকের বাড়িতে রান্না হচ্ছে না।
আবদুর রহিম নামের এক ট্রলারযাত্রী বলেন, ‘সব সময়ই দেখি জোয়ারের পানি বাড়লে বরইতলা ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে থাকে। এই জায়গা দিয়ে যাতায়াত করলে দুর্ভোগের কোনো শেষ থাকে না। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতি আমরা দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের এই দুর্ভোগ থেকে যেন রক্ষা করেন।’
ঢলুয়া ইউনিয়নরে গোলবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় আজ ঘরে রান্না হবে না। এখন থেকে ছয় মাস এভাবে জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাবে। আমাদের দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই।’
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দীন বলেন, বরইতলা ফেরিঘাট সংস্কারের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
পাউবো বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে প্রধান তিনটি নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৬০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। আরও দু-এক দিন এই ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাবে।
এএজে
