ঘুষ না দেওয়ায় লাঞ্ছিত শিক্ষক, ইউএন’র কাছে অভিযোগ

পেনশনার সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য ঘুষ না দেওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক ও তার দুই সন্তানকে লাঞ্ছিত করে ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৩ মার্চ) সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক হেলেনা বেগম।
তিনি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পূর্ব বাঞ্ছারামপুর এলাকার বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হেলেনা বেগম বাঞ্ছারামপুর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান তিনি। এরপর গত ৭ মার্চ সোনালী ব্যাংকের বাঞ্ছারামপুর বাজার শাখায় ১৫ লাখ টাকার দুটি পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে বিলাশ নামে ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের একটি তালিকা দিয়ে ১৫ মার্চ তাকে ব্যাংকে আসতে বলেন।
পরবর্তীকালে ১৫ মার্চ ব্যাংকে গেলে বিশাল ‘সিরিয়াল বিরক্তি’ দেখিয়ে ২২ মার্চ পুনরায় তাকে ব্যাংকে আসতে বলে জানান, এটার জন্য ‘কিছু খরচপাতি’ লাগবে। এ ঘটনার পর ১৫ মার্চ বিকেলে হেলেনার বড় ছেলে সৈয়দ ওসমান গণি বিষয়টি জানলে ব্যাংকে গিয়ে তিনি বিশাল নামে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে এবং ২২ মার্চের আগে ব্যাংকের পিওন কাদিরের সঙ্গে দেখা করতে বলেন বিশাল। কিন্তু ওসমান এতে রাজি হননি।
একপর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে হেলেনা তার ছোট ছেলে সৈয়দ ইফতেখার রসুল ও বড় মেয়ে সৈয়দা ইসরাত জাহানকে নিয়ে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ আবারও ব্যাংকে যান। কিন্তু বিশাল পেনশনার সঞ্চয়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান। ওই সময় হেলেনার দুই সন্তান এর প্রতিবাদ করলে হেলেনার সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন বিশাল। পরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শফিকুল আলম তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ব্যাংক থেকে বের করে দিতে বলেন।
হেলেনা বেগমের বড় ছেলে সৈয়দ ওসমান গণি বলেন, মায়ের কাছ থেকে ঘটনা জানার পর আমি ব্যাংকে যাই। তখন বিশালকে ব্যাংক থেকে বাইরে গিয়ে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে কতদিন সময় লাগে এবং একজন গ্রাহককে এভাবে কি ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া যায় কিনা- এ বিষয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে জানতে চাই। তখন তিনি আমার মা, ভাই ও বোনকে স্টুপিড বলেন। এসব ঘটনা আমি মুঠোফোনে ভিডিও করে রেখেছি। আমি এর বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে সোনালী ব্যাংকের বাঞ্ছারামপুর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শহিদুল আলম বলেন, পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি ছিল। বিষয়টি বলার পর ওই শিক্ষিকার ছেলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন তাকে ব্যাংক থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল।
এদিকে, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম। নেই সঙ্গে ইউএনও জানান, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে বিষয়টিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএম
