ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

Motobad news

আত্মসমর্পণের পর আপিল করবেন হাজী সেলিম

আত্মসমর্পণের পর আপিল করবেন হাজী সেলিম
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন


অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দণ্ডিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিম সাজার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করবেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিচারিক আদালতের ১৩ বছরের দণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাজী মো. সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, এর আগে হাইকোর্টের রায় অনুসারে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন হাজী সেলিম। আজ থেকে ৩০ দিন গণনা শুরু হতে পারে বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী। সে হিসেবে আলাপ আলোচনা করে আত্মসমর্পণের দিন ঠিক করা হবে। এরপর আপিল আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায় প্রকাশের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন হাজী সেলিমের আইনজীবী। সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, হাইকোর্টের রায়ে হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে সুপিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করবো।

আজ (বৃহস্পতিবার) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৬ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। এ রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। এর আগে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে বিচারকের স্বাক্ষরের পর তা প্রকাশ করা হয়েছে। আদালত ওইদিন রায়ে বলেছেন, বিচারিক আদালতে রায়ে দণ্ডিত হাজী মোহাম্মদ সেলিমের আপিল সংশোধন করে (আংশিক গ্রহণ ও আংশিক খারিজ) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ধারা সংক্রান্ত আপিল গ্রহণ করা হলো। এই আইনের ২৭ (১) এ আপিলের অংশ খারিজ করা হলো।

এর আগে হাজী সেলিমের করা আপিলের ওপর গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ধার্য দিনে সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের করা আপিলের ওপর এ রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চ। ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লালবাগ থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টে ওই আপিল (হাজী সেলিমের) পুনরায় শুনানি করতে বলা হয়। এরপর প্রায় পাঁচ বছর ওই আপিলের শুনানি হয়নি। সম্প্রতি আপিলটি শুনানির উদ্যোগ নেয় দুদক।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিচারিক আদালতে থাকা মামলার যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন। এরপর কয়েক দিবস শুনানি শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিলটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।

মামলায় দুদকের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। হাজী সেলিমের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান মনির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তামান্না ফেরদৌস।


এসএমএইচ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন