মির্জাগঞ্জে ৭ দিনে ডায়রিয়ায় ১৩ জনের মৃত্যু


পায়রা নদীর তীরে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা। পায়রার মিষ্টি পানি এখন লবণে ভরপুর। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের গ্রাম কালিকাপুর। সেখানকার কৃষক আলীম উদ্দীন শিকদার (৬৮) গত রবিবার সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ শরীর খারাপ হয়ে যায় তাঁর। এর কিছুক্ষণ পরই বমির সঙ্গে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার পাশাপাশি অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থার কারণে যাওয়া হয়নি হাসপাতালে। এ অবস্থায়ই পরদিন সন্ধ্যার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
শুধু আলীম উদ্দিন নয়, তাঁর মতো উপসর্গ নিয়ে ফরিদা বেগম, আনোয়ারা বেগমসহ গত সাত দিনে ওই অঞ্চলে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্গম যোগাযোগব্যবস্থার পাশাপাশি অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে তাঁরা কেউ হাসপাতালে যাননি। এমনকি ঘরোয়া চিকিত্সা বলতে শুধু খাবার স্যালাইন নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গেছেন। তা ছাড়া স্যালাইনের সংকটও আছে। চাহিদা মেটাতে পাশের উপজেলা গলাচিপা ও বাউফল থেকে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের সীমিত শয্যা এবং জনবল কম থাকায় শুধু ডায়রিয়ার রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কোনো রোগী হাসপাতালে মারা যায়নি।
দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা আরো বলেন, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৫০টি। এর মধ্যে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের জন্য ১৫টি শয্যা নির্ধারিত থাকলেও ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮৩ জন ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছেন ২৬৫ জন ডায়রিয়া রোগী। আইভি স্যালাইনের সংকট রয়েছে। পাশের উপজেলা থেকে এনে চাহিদা পূরণের চেষ্টা চলছে।
মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম লিটন সিকদার বলেন, মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় বাড়িতেই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, লবণাক্ত পানি এলাকার খালে, পুকুরে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। আর এসব পানি গ্রামের মানুষ রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করায় ডায়রিয়া হচ্ছে। তা ছাড়া প্রচণ্ড গরমেও ডায়রিয়ার হার বৃদ্ধি পেতে পারে। সূত্র কালের কন্ঠ
এইচকেআর
