সেনেরহাটে খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির চাল খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ


পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের সেনেরহাট বাজারে সোমবার রাতে জনৈক ফরিদ খোন্দকারের দোকানে ৬বস্তা চাল মজুদ দেখে স্থানীয় একটি সচেতন মহল ইউএনওকে খবর দিলে তিনি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার গণমাধ্যমকর্মী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ফরিদের দোকানে এক কোনে ছয় বস্তা চাল দেখতে পায়। তখন উপস্থিতিদের সম্মুখে থানা পুলিশ চালের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদ জানান, সে চাল ডিলার বাতেন খলিফার। ফরিদের এ বক্তব্য উপস্থিত উৎসুক জনতা এবং গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে অনেকে রেকর্ড এবং ছবি তুলে সংগ্রহে রেখেছেন।
ডিলারের কথা শুনে সকলের মনে সন্দেহের দানাবাঁধে। খোঁজ খবর নিয়ে জানাযায়,বর্তমান সরকার দরিদ্র মানুষকে সেবা প্রদানের জন্য “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুদা হবে নিরুদ্দেশ”এ শ্লোগানকে সামনে রেখে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় প্রতিমাসে প্রতিকার্ডধারী ১০কেজি দরে ৩০কেজি চাল ক্রয় করতে পারবে।
যেখানে চাল খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগ সেটি হল একই ইউনিয়নের ১,৫, ৭নং ওয়ার্ড এবং ২নং ওয়ার্ডের আংশিক মানুষের মধ্যে এ চাল বিক্রয় করা হবে। এ ব্যাপারে ওই ওয়ার্ডের ডিলার স্থনীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাতেন খলিফার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠো ফোনে জানান,জব্ধকৃত চাল আমার না আমার বন্ধু রাজুর। রাজুর ৩৮/৪০টির একটি ছাগলের ফার্ম রয়েছে।
তাহলে রাজু কি ঐ ছাগলের জন্য চাল পাঠিয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে বাতেন খলিফা জানান, বন্ধু রাজু ফোনে আমাকে জানান আমি কিছু চাল পাঠিয়েছি আপনি রেখে দিবেন। জবাবে আমি বলি আমার গোডাউনের অবস্থা ভালনা আমার চালই (স্থানীয়) আওয়ামী লীগের সভাপতির অফিসকক্ষে রাখি। তবুও তার অনুরোধে ফরিদের দোকানে চাল রাখা হয়। বাজার থেকে চাল পাঠালে সে বস্তারতো মুখ সেলাই করা থাকবে বাঁধা কেন?এবং আপনিইবা আপনার চাল অন্য অফিসে কেন? গোডাউন থেকে পানি পড়ার ফলে। সে বিষয়ে সয়শ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানে কিনা ? জবাবে খলিফা জানান , না তাদের জানানো হয়নি চেয়ারম্যান জানেন।
মুঠোফোনে জানতে চাইলে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্না জানান, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা বা আমাকে জানানোও হয়নি।
ভান্ডরিয়া উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক সুমন মন্ডল জানান,ইউএনও স্যার আমাকে পাঠিয়েছেন বিষয়টি আমি পর্যালোচনা করে দেখে জানাবো।
ইউএনও সীমা রানী ধর জানান, বিষয়টি আমার গোচরে আছে। আমি থানাপুলিশ এবং খাদ্য পরিদর্শককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি তারা আমাকে সঠিক বিষয়ে জানানোর পর যদি সরকারি চাল হয়ে থাকে তা হলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বিষয়টি জানারপরে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা পিরোজপুর জেলা সরকারি জিপি এ্যাড: শহিীদুল হক পান্না বিষয়টি পিরোজপুর জেলা প্রশাসককে জানান বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে সোমবার রাতেই চাল সরানোর চেষ্টাকরলে সঠিক প্রমান না পাওয়া পর্যন্ত ফরিদের দোকানে রাখার নির্দেশে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাল সেখানে রাখা হয়।
এদিকে সর্বশেষ অবস্থা জানতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পৃথকভাবে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে (৫সেপ্টেম্বর) পিরোজপুর জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রথমই এ প্রতিবেদকের কাছ থেকে শুনেছেন। উপজেলা কর্মকর্তা তাকে অবহিত করেছেন কিনা জানতে চাইলে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, আমাকে জানানো হয়নি। তখন তিনি আরো বলেন,সরাকের খাদ্যবান্ধব কর্মর্সূচির আওতায় যে চাল বিক্রয় করা হয় সে জন্য উপজেলা পর্যায়ে একটি বিক্রয় ব্যাবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। যার সভাপতি হলেন ইউএনও। আমি যেহেতেু শুনেছি সেহেতু আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।
অন্যদিকে একটি বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, ঐ চাল সড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হলে তা ব্যর্থ হয়। রাজুর কথা বলা হলে তাকে ক্রয়ের রসিদ আনার জন্য বলা হলে তিনি রসিদও সংগ্রহ করেন। তবে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। তাহলে চাল কি ছাগলের না মানুষের? এ প্রশ্নের জবাব নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল।
এইচকেআর
