বাউফলে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজ ফেলে রাখায় পাঠদান ব্যাহত


বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনের নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এক বছর আগে। কিন্তু নির্মাণাধীন ভবটির এখন পর্যন্ত পিলার নির্মিত হয়নি। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলেও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয়টির পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এমন অবস্থা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর ইউনিয়নের আলেয়া রহমান লেডিস ক্লাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,বিদ্যালয়টির একমাত্র ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষনা করে ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রায় চার বছর আগে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিপ্তরের অধীনে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে দরপত্রের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়টির পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএইচ এন্টারপ্রাইজ। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ ৯২ হাজার ৬২২ টাকা। ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল।ইতিমধ্যে ১৫ লাখ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়,ভবনটির গ্রেট বিম করা হয়েছে।পিলারের জন্য রড বের করে রাখা হয়েছে। যাতে মরিচা পড়েছে।বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় পাশে একটি টিনসেড ঘর উঠিয়ে সেখানে পাঠদান নিচ্ছেন শিক্ষকেরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, যে পর্যন্ত নির্মাণ কাজ হয়েছে তাতে ছয়-সাত লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে তা জানি না। তবে বাউফল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রায় দেড় বছর আগে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করে।গ্রেট বিম করার পর নির্মাণ কাজ ফেলে রেখেছে।এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী বলে,প্রায় দেড় বছর বিদ্যালয় খুলছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণ কাজ ফেলে রাখায় তাদের টিনসেড ঘরে ক্লাস হচ্ছে। বৃষ্টির সময় পানি পড়ে। আর গরমের সময় ক্লাসে বসে থাকতে খুবই কষ্ট হয়।এতে তাদের পড়াশুনার ব্যাঘাত ঘটছে।তারা দ্রুত ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন,এই ভবনের নির্মাণ কাজ শুরুর অনেক পরে পাশের একটি বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সেই ভবনে এখন ক্লাস হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, যিনি কাজ করছেন স্থানীয়ভাবে তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তদারকের দায়িত্বে থাকা আবু সায়েম ওরফে দানিয়াল মুঠোফোনে বলেন,‘বরাদ্দ নাই। আমার জানা মতে যে পরিমান কাজ হয়েছে তার বিল পাননি।আশা করছি খুব শিগগির ফের ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে এবং নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. হাজেরা বেগম বলেন,‘ভবনের নির্মাণ কাজ ফেলে রাখায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। এ বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল হক বলেন,‘ভবনের কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি।’
উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন বলেন,‘কাজে ধীরগতি দেখে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তিন দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য।এরপরেও নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্মাণ কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এইচেকআর
