বাউফলে নির্যাতনে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ


পটুয়াখালীর বাউফলে আরাফাত হোসেন (৮) নামের এক শিশুশিক্ষার্থীকে নির্যাতনের দুই দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় বাউফল থানায় মামলা না নেওয়ায় রোববার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দ্বিতীয় আমলী আদালতে মামলা করেছেন শিশুটির বাবা মো. হাসান প্যাদা (২৮)।
মামলায় আসামি করা হয়েছে বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের কাশিপুর আল ইয়াসিন শিশু সদন হাফিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জিকিরউল্লাহ (৪৫) ও তাঁর ছোট ভাই কাওছারসহ (৪০)অজ্ঞাত আরও তিন-চার ব্যক্তিকে। আরাফাত ওই মাদ্রাসার নজরানা বিভাগের ছাত্র ছিল। আট-নয় মাস আগে ওই মাদ্রাসায় আরাফাতকে ভর্তি করা হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
মো. হাসান প্যাদা বলেন, পড়া মুখস্থ না হওয়ায় গত রোববার বেলা দুইটার দিকে তাঁর একমাত্র সন্তান আরাফাতকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জিকিরউল্লাহ (৪৫)। এতে আরাফাতের মাথার হাড় ভেঙে যায় এবং ডান চোখে গুরুতর জখম হয়। কিন্তু বিষয়টি তাঁদের না জানিয়ে জিকিরউল্লাহ তাঁর আপন ছোট ভাই মো. কাওছারের (৪০) মাধ্যমে আরাফাতকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। অবস্থা ভালো না দেখে পরের দিন সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁদের মুঠোফোনে জানানো হয়, আরাফাত ডান চোখের ব্যথায় অসুস্থ।
মো. হাসান প্যাদা বলেন, পড়া মুখস্থ না হওয়ায় গত রোববার বেলা দুইটার দিকে তাঁর একমাত্র সন্তান আরাফাতকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. জিকিরউল্লাহ। হাসান প্যাদা বলেন, তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে আরাফাতকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনি আরাফাতকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সে মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার রাত ১১টার দিকে আরাফাতের লাশ বাউফলের গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
হাসান প্যাদা অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় শনিবার শিক্ষক জিকিরউল্লাহ ও তাঁর ভাই কাওছারের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তাই আজকে রোববার পটুয়াখালী আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান।
এ ঘটনার পর জিকিরউল্লাহ মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন,‘আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ থানায় মামলা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন,শিশুটির বাবা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিলেন।লিখিত অভিযোগ করেননি। যদিও গত শনিবার দুপুরে বাউফল থানা ভবনের মধ্যে থেকে শিশুটির বাবা হাসান প্যাদা বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি কামরুজ্জামান ওরফে বাচ্চুসহ অন্যেএক সাংবাদিককে লিখিত অভিযোগের ফটোকপি সরবরাহ করেন। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সাংবাদিক কামরুজ্জামান।
এইচেকআর
