ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

কাউখালীর ঐহিত্যবাহী শীতল পাটির কদর বিদেশেও

কাউখালীর ঐহিত্যবাহী শীতল পাটির কদর বিদেশেও
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার চিড়াপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের সুবিদপুর গ্রামের শীতল পাটির সুনাম ছিল সারাদেশে। প্রায় দুইশ’ বছর ধরে এই গ্রামের পাটিকররা কোনোমতে ওই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। 

কিন্তু যথাযথ স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দৃষ্টিনন্দন এ শীতল পাটির বিপন্ন দশা। দেশের  যে কয়টি জেলায় শীতল পাটি তৈরি হয় তার মধ্যে পিরোজপুরের কাউখালী অন্যতম। কাউখালী উপজেলা সদর থেকে দু’কিলোমিটার দক্ষিণে সুবিদপুর গ্রামের অবস্থান।

যে গ্রামের ৬০টি পরিবার আজো পাটি শিল্পকে তাদের বাঁচার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে আঁকড়ে রয়েছে। এখানকার তৈরি শীতল পাটি পাইকারদের হাত ঘুরে চলে যায় ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বাজারে। 

রপ্তানি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না  পেলেও  সৌখিন ব্যবসায়ী, বেড়াতে আসা অতিথিদের মাধ্যমে শীতল পাটি যাচ্ছে ভারত, নেপাল, ভুটান, মালয়শিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ব্রিটেনসহ অনেক দেশে। অনেকে আবার ঘরের শোভাবর্ধনে নকশা করা শীতলপাটি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখেন।

সুবিদপুর গ্রামের রবিন পাটিকর জানান, কালের বিবর্তনে কাউখালীর পাটি শিল্প আজ বিলীনের পথে। অভাব তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাত-দিন পরিশ্রম করেও দু’বেলা দু’মুঠো আহার জোগাতে পারছে না তারা। বাপ দাদার পেশা তাই এ পেশা ছাড়তেও পারছিনা।  উচ্চশিক্ষা দূরের কথা নাম দরখাস্ত শেখারও সুযোগ পায় না ৯০ ভাগ শিশু। পাটিকর সীমা রানি জানান, পাঁচ ফুট প্রস্থ ও সাত ফুট দৈর্ঘ্যের ভালো মানের একটি শীতল পাটি কাউখালীর বাজারে দুই হাজার থেকে দশ হাজার  টাকায় বিক্রি হয়।

মধ্যম মানের একটি পাটির দাম আটশ’ থেকে ১২শ টাকা। এ ছাড়া চারশ’-পাঁচশ’ টাকায়ও কিছু শীতল পাটি  মেলে। তিনি আরো জানান, একটি শীতল পাটি তৈরি করতে সাধারণত তিন-চারদিন লাগে। একজন বয়স্ক পাটিকর সাতদিনে একটি পাটি তৈরি করতে পারেন। 

গড় হিসেবে দেখা যায়, একটি পরিবারের তিন সদস্য মিলে কাজ করলেও মাসে ১০টির বেশি পাটি তৈরি সম্ভব নয়। ১০টি পাটি বিক্রি করে মাসে সর্বোচ্চ ছয়-সাত হাজার টাকা আয় হয়। এই আয়েই চলে পাটিকরদের সংসার। পাটি শিল্পের বিকাশে বড় সমস্যা হলো অর্থনৈতিক সংকট। 

শীতলপাটি তৈরির জন্য পাটিকরদের সরকারি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কোনো ঋণ  দেয় না।  সরকার শীতল পাটি রপ্তানির উদ্যোগ নিলে পাটিকরদের সুদিন আসতো।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজনল মোল্লা বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে যা কিছু দরকার, তার জন্য চেষ্টা করবো।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন