ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news
যুদ্ধাপরাধী মামলা তদন্ত শুরু হওয়ায়

গা ঢাকা দিয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চরের আতঙ্ক খোকন রাজাকার!

গা ঢাকা দিয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চরের আতঙ্ক খোকন রাজাকার!
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সুন্দরবনের দুবলার চরের রাজাকার খোকনের নির্যাতনের শিকার হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে আসে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলা তুষখালী গ্রামের মামুন শরীফ ও মফিজুল শরীফ সহ অসংখ্য মৎস্য ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়েছেন। 

শফিউল্লাহ খোকনের (৭৩) বিরুদ্ধে দায়ের করা যুদ্ধাপরাধী মামলা তদন্ত কার্যক্রম জোর গতিতে শুরু হওয়ায় গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি চার দশকে হয়ে উঠেছেন সুন্দরবনের দুবলার চর মৎস্যপল্লীর অঘোষিত রাজা। 

প্রভাব আর আধিপত্য বিস্তরের মাধ্যমে নিরীহ জেলেদের শাসন ও শোষণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি খুলনার রূপসা উপজেলার দেয়ারা এলাকার বাসিন্দা।

দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান ওরফে শ্যাম মল্লিককে হত্যার দায়ে খোকনসহ তিনজনকে আসামি করে ২০২২ সালে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন নিহতের ছেলে সাইফুল মল্লিক গামা। গত ২৫ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তারা রূপসা থানায় এসে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।

শুঁটকি ব্যবসায়ী গাজী রহমান, কেরামত মল্লিক ও বোরহান গাজীর দাবি, যুদ্ধাপরাধের তদন্তের খবর পেয়ে খোকন আত্মগোপনে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে জেলে পল্লীতে। 

কয়েকদিন ধরে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, জেলে ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ ও উল্লাসের খবর তিনি শুনেছেন। 

মামলার বাদী, সাক্ষী, চরের মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্তত ১৩ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রজীবনে ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফ্রন্টের (এনএসএফ) সক্রিয়কর্মী ছিলেন শফিউল্লাহ খোকন। 

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে ১৯৬৮-১৯৬৯ সালে খুলনায় মুসলিম লীগের প্রভাবশালী নেতা খান এ সবুর এর লাঠিয়াল বাহিনীর প্রভাবশালী সদস্য হন এই খোকন। 

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় খান আমজাদ হোসেন রাজাকার বাহিনীর  খুলনা জেলা কমান্ডার হওয়ার পর তার দলে যোগ দেন খোকন। পরে তাকে  বর্তমান রূপসা (সাবেক খুলনা) থানার দেয়ারা এলাকার রাজাকার কমান্ডার নিযুক্ত করেন। তখন সে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি রাজাকার বাহিনী গঠন করেন। 

সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান ওরফে শ্যাম মল্লিককে খোকন গুলি করে নিজ হাতে হত্যা করে। খোকন ও  তার বাহিনীর হাতে আরও দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া নারী ধর্ষণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটিয়েছে খোকন ও তার সহযোগীরা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর খোকন ভারতে পালিয়ে যায়। দু’বছর আত্মগোপনে থাকার পর দেশে ফিরে বটিয়াঘাটা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। 

১৯৮৩-৮৪ সালে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অবঃ) জিয়াউদ্দিনের পাশাপাশি দুবলার চরে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার সরদার মাহাবুবুর রহমান বলেন, শফিউল্লাহ খান খোকন তালিকাভুক্ত রাজাকার কমান্ডার। রূপসার রাজাকারের তালিকায় তার নাম রয়েছে।

এসব বিষয়ে আত্মগোপনে থাকা খান শফিউল্লাহ খোকনের বক্তব্য জানতে তাঁর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া মেলেনি।


 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন