ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

‘মোগো সব নদীতে গিলে খাইছে’

‘মোগো সব নদীতে গিলে খাইছে’
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ইন্দুরকানীতে কচা নদীর ভাঙনে দিশেহারা তীরবর্তী বাসিন্দারা। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে তারা। কেউ গুচ্ছগ্রামে, কেউবা আশ্রয়ণে খুঁজছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ইন্দুরকানী, কালাইয়া, সাঈদখালী, ঢেপসাবুনিয়া বালিপাড়া, চরবলেশ্বর, চণ্ডি পুর, খোলপেটুয়া, কলারণ ও টগড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে কচা নদী বয়ে গেছে। এসব গ্রামে যে বেড়িবাঁধ ছিল, তা প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। এতে দিন দিন বাড়ছে ভাঙন।

এদিকে এক বছর ধরে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলে আসছে, বেড়িবাঁধের প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া আছে। অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে। এমন কথা আর শুনতে চায় না এলাকাবাসী। তারা চায় নদীর তীরে পাইলিংসহ টেকসই বেড়িবাঁধ।

কচা নদীতীরবর্তী কালাইয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাঁধ ভেঙে গেছে। টগড়া থেকে কলারণ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত। নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাগান বাড়িসহ ফসলি জমি। নদীতে পানি বাড়লেই  কৃষিক্ষেতে  পানি ঢুকে যায়। স্থানীয়রা জানান, বেড়িবাঁধ না থাকায় গত বছর আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তাঁদের।

নদীভাঙনে বাড়িঘরহারা কালাইয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জলিল বলেন, ‘মোগো সব কচা নদীতে গিলে খাইছে।  বাপ-দাদার জায়গাটুকুও নদীতে লইয়া গেছে। এহন কিছুই নাই। মাইনষের বাড়ি কাম কইরা খাই। মোরা মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে ত্রাণ চাই না। চাই এট্টা শক্ত বেড়িবাঁধ।’

একই গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, কচা নদীর ভাঙনে বেড়িবাঁধ এক বছর আগে ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ফলে বেড়েছে নদীভাঙন। বাঁধ না থাকায় পানি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে এলাকাবাসীর ফসল ও জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেল, এ গ্রামের রবীন ব্যাপারী, মিরাজ হাওলাদারসহ অনেকের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ায় তারা অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।

উপজেলার ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম তালুকদার জানান, কচা নদীর ভাঙনে ইন্দুরকানী, কালাইয়া, টগড়াসহ অনেক গ্রামের বাড়িঘর, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নদীভাঙন রোধে পাইলিংসহ বেড়িবাঁধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছে, বরাদ্দ নেই বলে কাজ করা যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম জানান, এ উপজেলার কচা নদীর তীরবর্তী বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি। এ ব্যাপারে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। বরাদ্দসাপেক্ষে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।

পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মহবুবে মাওলা মেহেদী হাসান জানান, কচা নদীতীরবর্তী বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া আছে। অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু করা যাবে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন