ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

পটুয়াখালীতে আ’ লীগ- বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা, আসামি ৪ শতাধিক

 পটুয়াখালীতে আ’ লীগ- বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা, আসামি ৪ শতাধিক
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালীতে বিএনপির সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। দুটি মামলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৪৫ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে চার শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত শনিবার সকালে জেলা বিএনপি সমাবেশ করে। এদিন জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর শনিবার রাতে প্রথম মামলাটি করেন জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক রায়হান হোসেন। মামলায় জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মনির মুন্সিকে প্রধান আসামি করে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করেন। এ ছাড়া মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী রায়হান হোসেন বলেন, যুবলীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা তাঁদের পথরোধ করেন এবং তাঁকে (রায়হান) মারাত্মকভাবে জখম করেন। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রোববার সকালে অপর মামলাটি করেছেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন। তিনি মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করেন এবং ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করেন। 
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে কর্মীদের নিয়ে শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে পৌরসভার ঈদগাহ মাঠ এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতৃত্বে আসামিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে জখম করেন। বর্তমানে তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

দুটি মামলা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান। দলের নেতা-কর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আসলে আওয়ামী লীগ বিএনপির সমাবেশকে পণ্ড করতে বিএনপির ওপর হামলা করে উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। 

আমরা মনে করি, বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আওয়ামী লীগের এটি একটি নীলনকশা। এই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে শনিবার বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। মিথ্যা মামলা দেওয়া বিএনপিকে দমন করার কৌশল। তবে জনগণ যেভাবে জেগে উঠেছে, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না। আমাদের আন্দোলন চলবে, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’

প্রসঙ্গত, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার সকালে পটুয়াখালীতে জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। 

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। অন্যদিকে ওই দিন সকালে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা শহরে শান্তি সমাবেশের ডাক দেন। মিছিল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এসব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপির সমাবেশস্থলের দিকে এগোলে পথে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। উভয় পক্ষই লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। 

সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের কারণে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেলে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ তিনটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন