মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হতে যাচ্ছে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা


“আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার” এই শ্লোগানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ২৫টিসহ চতুর্থ পর্যায়ের ১৪১টি অর্থাৎ মোট ১৬৬টি ঘর আগামী ২২ মার্চ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তরের শুভ উদ্বোধন করবেন।
দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ন -২ প্রকল্পের আওতায় দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য উপজেলার মতো পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলায়ও ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা করা হয়। এই তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির তত্ত্বধানে একটি চলমান প্রক্রিয়া।
তালিকা অনুযায়ী ভাণ্ডারিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার বাকি ছয়টি ইউনিয়নে ‘ক শ্রেণি’ অর্থাৎ একেবারেই ভূমিহীন- গৃহহীন ৮০১টি পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের ১ম,২য় ও ৩য় পর্যায়ে যথাক্রমে ১১০,৩৫০,২০০টি মোট ৬৬০টি ভূমিহীন- গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৬৩৫ টি গৃহ তৈরী করে ভূমিহীন- গৃহহীনদের মাঝে সনদপত্র ও দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত সকল পরিবার পর্যায়ক্রমে পুর্নবাসিত হবে।
৪র্থ পর্যায়ে ১৪১টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে এবং এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঘর গুলোতে তালিকাভুক্ত ২৫টি এবং ১৪১টি ‘ক শ্রেণি’অর্থাৎ একবারেই ভূমিহীন - গৃহহীন ১৬৬ পরিবারকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে ভাণ্ডারিয়াকে ভূমিহীন - গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব হবে। ‘ক শ্রেণির’ তালিকা ওয়ার্ড পর্যায়ে, ইউনিয়ন পর্যায়ে ও উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি কর্তৃক দফায় দফায় যাচাই-বাছাই করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৫ মার্চ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা অডিটরিয়ামে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুর্নবাসন কার্যক্রম অগ্রগতি ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিতকরণ বিষয়ে উপজেলা যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইউএনও অফিসসূত্র জানায়, পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপিকে অবহিত করে , উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌর প্রশাসক,বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষক ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা রানী ধর এর সভাপতিত্বে এ যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত; গত বছরের ৪আগষ্ট তারিখের উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায় ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ভ‚মিহীন ও গৃহহীনের তালিকা চুড়ান্ত করে একই বছরের ২২নভেম্বর উপজেলা যৌথ কমিটির সভায় নদীভাঙ্গন, বিভিন্ন দুর্যোগ বা অন্য কোন কারনে নতুন কোন ভ‚মিহীন তৈরি না হলে ৪র্থ পর্যায়ে পুনর্বাসিতব্য ১৪১ জনসহ মোট ৮০১ জনকে পুনর্বাসন করা হলে এই উপজেলায় আর ভূমিহীন থাকবে না এই মর্মে ভাণ্ডারিয়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ২ শতাংশ করে খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক প্রান্তিক ভূমিহীন - গৃহহীন পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সমবায়ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সুপেয় খাবার পানি ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ সম্ভাব্য সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর এ স্বপ্নের প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমানের নির্দেশনা ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে একক গৃহ নির্মাণ ও পরিকল্পনা সংক্রান্ত ম্যানুয়াল অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ২কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেড সেমিপাকা প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ২লাখ ৮৪ হাজার ৫০০শত টাকা।
পরবর্তীতে নদীভাঙ্গন কবলিত, দুরারোগ্য ব্যধিতে চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হলে বা পারিবারিক বিভাজনের ফলে বসবাসের কোন অবস্থা না থাকলে অথবা অন্য কোন কারণে ভ‚মিহীন তৈরী হলে তাদেরকেও পরবর্তীতে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে বলে সভায় অবহিত করা হয়। এ
দিকে নির্মানাধীন ঘর গুলো ইতি মধ্যে পরিদর্শণ করেছেন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. জাহেদুর রহমান। এসময় ইউএনও সীমা রাণী ধর,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেনসহ স্ব স্ব স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এস.সমদ্দার/এইচকেআর
